পঞ্চম শ্রেণি পরিবেশ বিজ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর
১. শীতকালে পায়ের গোড়ালি ফাটলে কী করবে ?
উত্তরঃ শীতকালে গোড়ালিতে নোংরা জমে পা ফেটে যেতে পারে, পা ফাটলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ভিজে চামড়া হাত দিয়ে ঘষতে হবে, তাহলে চামড়া পরিষ্কার হয়ে যাবে। এরপর একটু তেল বা ক্রিম লাগাতে হবে।
২. একটি ইন্দ্রিয় অকেজো হলে অন্য ইন্দ্রিয়গুলি কীভাবে সাহায্য করে উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি ইন্দ্রিয় আমাদের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। তবে কোনো ইন্দ্রিয় অকেজো হলে অন্য ইন্দ্রিয় সাহায্য করে। যেমন - কেউ চোখে কম দেখলেও কানে শুনে কোনো ব্যক্তির নাম বলতে পারবে।
৩. পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কাজ লেখো।
উত্তরঃ (১) জিভঃ- নানান খাবারের স্বাদ নেওয়া, নানা রকম স্বাদের তফাত বোঝা। (২) নাকঃ- কোনো কিছুর গন্ধ শোঁকা, গন্ধের পার্থক্য বোঝা। (৩) কানঃ- কান যে-কোন শব্দ শোনা, শব্দ শুনে বুঝতে পারা কার বা কীসের শব্দ শুনে দূরত্ব আন্দাজ করা । (৪) চোখঃ- যে-কোন জিনিস দেখা। (৫) চামড়াঃ- কোনো কিছুর স্পর্শ অনুভব করা, ঠান্ডা গরম অনুভব করা।
৪. রক্তাল্পতা কাকে বলে ?
উত্তরঃ রক্তে লোহিত রক্তকণিকা থাকে। এর জন্য রক্তের রং লাল। রক্তে লোহিত রক্তকণিকা কমে গেলে শরীর ফ্যাকাসে দেখায়। একে রক্তাল্পতা বলে।
৫. রক্তাল্পতা হলে কীভাবে প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় ?
উত্তরঃ চোখের নীচের পাতা টেনে দেখতে হয়, যদি দেখা যায় সেখানটা সাদাটে তবে বুঝতে হবে রক্তাল্পতা হয়েছে। আবার আঙুলের মাথা টিপে দেখলে যদি সাদা মনে হয় তবে বুঝতে হবে রক্তাল্পতা হয়েছে।
৬. পাঁচটি ইদ্রিয়ের মধ্যে একটি অকেজো হলে কীভাবে কাজ চলে ?
উত্তরঃ পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মধ্যে যে-কোন একটি অকেজো হলে বাকি চারটি ইন্দ্রিয় তাকে সাহায্য করে, যেমন - অন্ধ ব্যক্তি চেনা মানুষের গলার স্বর শুনে বলতে পারেন। কানামাছি খেলায় শব্দ শুনে ব্যক্তিকে খোঁজা ইত্যাদি।
৭. আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় কী কী ভাবে সাড়া দেয় ?
উত্তরঃ চোখে আলো পড়লে চোখ বুজে যায়। গায়ে চিমটি কাটলে ব্যথা বোধ পায়। বাজ পড়লে কানে তালা ধরে যায়। দুর্গন্ধ বা সুগন্ধ বেরলে নাকে সেই গন্ধ অনুভূত হয়। ঝাল লাগলে জিভ জ্বালা করে।
৮. জিভের জল আসলে কী ? কী কাজে লাগে ?
উত্তরঃ জিভের জলকে বলে মুখের লালা। আমরা যখন খাবার খাই মুখের লালা ওই খাবারের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে হজম করতে সাহায্য করে।
৯. সাঁতার কাটা শরীরের পক্ষে ভালো কেন ?
উত্তরঃ সব ব্যায়ামে শরীরের উপকার হয়। ফুটবল, কবাডি, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদিতে শরীরের অনেক জায়গায় ব্যায়াম হয়। কিন্তু সাঁতারে একসঙ্গে শরীরের সব জায়গায় ব্যায়াম হয়। সেইজন্য সাঁতার শরীরের পক্ষে খুব ভালো।
১০. খাবার খারাপ হয়ে যায় কী করে ?
উত্তরঃ খাবার দুটি কারণে খারাপ হয়ে যেতে পারে। যেমন - (১) খাবার ভ্যাপসা গরমে পচে যেতে পারে। (২) বাসি হয়ে ভিতরে ভিতরে খারাপ হয়ে যেতে পারে, আবার খারাপ খাবারে ছাতা পড়েও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
১১. ফল খাওয়ার উপকারিতা লেখো।
উত্তরঃ ফল সহজে হজম হতে সাহায্য করে। শরীরের নিস্তেজ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিকে সতেজ করে। সহজে মোটা হতে দেয় না। বিভিন্ন রোগ আটকায়। শরীরে জলের ঘাটতি মেটায় ফল।
১২. সব ফল কি সারাবছর পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ না, কিছু ফল সারাবছর পাওয়া যায়, যেমন - কলা। কিছু ফল গরমকালে পাওয়া যায়, যেমন - আম। কিছু ফল শীতকালে পাওয়া যায়, যেমন - কমলালেবু।
১৩. প্রাণীজ খাবার কাকে বলে ?
উত্তরঃ নানা প্রাণী থেকে আমরা যেসব খাবার পাই তাকে প্রাণীজ খাবার বলে। যেমন - দুধ, মধু, মাছ, মাংস, ডিম প্রভৃতি।
১৪. কোনো প্যাকেটের খাবার কেনার সময় কী দেখে কিনতে হয় এবং কেন ?
উত্তরঃ কোনো প্যাকেটের খাবার কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে যে তারিখ লেখা থাকে তা দেখে কিনতে হয়, কারণ ওই তারিখ থেকে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ওই খাবার না খেলে খাবার নষ্ট হয়ে যাবে। তাই কেনার সময় নির্দিষ্ট তারিখটি অবশ্যই দেখে কিনবে।
১৫. এক দেশের খাবার অন্য দেশে কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল ?
উত্তরঃ এক দেশের মানুষ যখন জলপথে অন্যদেশে জাহাজে করে যাতায়াত করছিল তখন তারা সঙ্গে করে খাবারও নিয়ে যেত, এইভাবে একদেশ থেকে অন্যদেশে পণ্য (খাবার) ছড়িয়ে পড়েছিল। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে একই ভাবে খাবার ছড়িয়ে পড়েছিল।
১৬. মানুষ নদীর তীরে ঘরবাড়ি করেছিল কেন ?
উত্তরঃ নদীর তীরে ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছিল, কারণ - (ক) নদীর জল ব্যবহার করতে পারত চাষবাসে এবং পানীয় হিসেবে। (খ) যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে নদীপথ ব্যবহার করত। নদী থেকে মাছ পেত খাবার হিসেবে।
১৭. মানুষ প্রথমে আগুন জ্বালিয়েছিল কীভাবে ?
উত্তরঃ প্রথমদিকে মানুষ আগুন জ্বালাতে পারত না। বনের গাছের শুকনো ডালে ডালে ঘষা লাগত এবং আগুন জ্বলে উঠত। সেই আগুন জ্বালা কাঠ এনে রাখত এবং একটি কাঠ থেকে আর একটি কাঠ ধরিয়ে নিত। এইভাবে মানুষ আগুন জ্বালিয়েছিল দেশলাই ছাড়া।
১৮. খাদ্য ও অখাদ্য কী ?
উত্তরঃ যেগুলি আমরা খাই সেগুলি হল খাদ্য আর যেগুলি আমরা ফেলে দিই অর্থাৎ খাই না সেগুলি হল অখাদ্য। যেমন - কড়াইশুঁটির শুধু বীজ খাই সুতরাং বীজ হল খাদ্য আর খোসা ফেলে দিই, এক্ষেত্রে খোসা হল অখাদ্য। কিন্তু এই খোসা অন্য প্রাণীর খাদ্য হতে পারে।
১৯. পোশাকে মানুষকে কীভাবে চেনা যায় ?
উত্তরঃ বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন খেলোয়াড়ের বা একই খেলায় বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম পোশাক থাকে। যা দেখে তাদের পেশা, দায়িত্ব সম্পর্কে জানা যায় বা বোঝা যায়, অর্থাৎ মানুষকে চেনা যায়। যেমন - হাসপাতালে নার্সরা সাদা শাড়ি বা সাদা স্কার্ট পরে, মাথায় সাদা টুপির মতো পরে। পুলিশের পোশাক খাকি রঙের হয়, তবে কলকাতার পুলিশের পোশাক সাদা রঙের। ফুটবল খেলায় সবার জার্সি এক হলেও গোলকিপারের জার্সি আলাদা হয়।
২০. আমরা ব্যবহার করি এরকম তিনটি সিন্থেটিক পোশাকের নাম লেখো।
উত্তরঃ বর্ষাকালের বর্ষাতি, সিন্থেটিক শাড়ি, উলের পোশাক - এগুলি সবই খনিজ তেলের বর্জ্যপদার্থ দিয়ে তৈরি হয়।
২১. পশম কী ?
উত্তরঃ ভেড়ার থেকে যে লোম সংগ্রহ করা হয় তাকে পশম বলে। তবে কোনো কোনো ছাগল থেকেও লোম সংগ্রহ করা হত।
২২. ক্যাসমিলন কী ?
উত্তরঃ সিন্থেটিক উলকে ক্যাসমিলন বলে।
২৩. মানুষ প্রথমে কী পোশাক পড়ত ?
উত্তরঃ মানুষ প্রথমে কোনো পোশাক পড়ত না। তারপর ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পশুর চামড়া, গাছের ছাল, লতা-পাতা পড়ত।
২৪. পশুপাখিদের শীত কম লাগে কেন ?
উত্তরঃ পশুপাখিদের গায়ে লোম বা পালক আছে। এই পালক শীতের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাই পশুপাখিদের শীত কম লাগে।
২৫. স্কুলের ঘর আর বাড়ির ঘরের মধ্যে মিল ও অমিল লেখো।
উত্তরঃ স্কুলের ঘরগুলি লম্বা ও চওড়ায় অনেক বড়ো হয়। স্কুল ঘরে চেয়ার, বেঞ্চ, টেবিল, মানচিত্র ও অন্যান্য উপকরণ থাকে। বাড়ির ঘরগুলি তুলনামূলকভাবে ছোটো হয়। সেখানে খাট, বিছানা, আলনা, দ্য-একটি চেয়ার টেবিল, রান্নাঘর এবং রান্নার সরঞ্জাম থাকে। স্কুলের ঘর এখন সবই প্রায় পাকা ইটের তৈরি, আর বাড়ির ঘরে মাটির দরমার বেড়া, টালির ছাদ, শন, খড়ের ছাউনি ইত্যাদি দেখা যায়। তবে শহরে প্রায় সব বাড়ি এবং গ্রামের অনেক বাড়ি পাকা ইটের তৈরি।