Type Here to Get Search Results !

দশম শ্রেণী ভূগোল প্রথম অধ্যায় (পৃথিবীর বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ) পরিচ্ছেদ ১.১ ভূমিরূপ গঠনে বহির্জাত প্রক্রিয়া (Exogenetic Processes)



দশম শ্রেণি ভূগোল প্রথম অধ্যায় (পৃথিবীর বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ) পরিচ্ছেদ ১.১ ভূমিরূপ গঠনে বহির্জাত প্রক্রিয়া (Exogenetic Processes) প্রশ্ন ও উত্তর

পরিচ্ছেদ ১.১ 

১. ভূমিরূপ কাকে বলে ?
উত্তর :- সাধারণভাবে ভূ-পৃষ্ঠের উপরিপিঠের আকার বা আকৃতিকে ভূমিরূপ বলে। অর্থাৎ পৃথিবীপৃষ্ঠের গঠন, আকৃতি, উচ্চতা, ঢাল প্রভৃতি মিলিতভাবে ভূমির বা পৃথিবীপৃষ্ঠের যে চেহারা বা রূপ বাহ্যিক অবয়ব ফুটে ওঠে, তাকে ভূমিরূপ বলে।

২. বহির্জাত প্রক্রিয়া কাকে বলে ?
উত্তর :- ভূপৃষ্ঠের বাইরের বিভিন্ন স্থিতিশীল প্রাকৃতিক শক্তি যথা - সূর্যকিরণ (উচ্চতা), বায়ুচাপ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা প্রভৃতি এবং গতিশীল প্রাকৃতিক শক্তি যথা - নদী, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ প্রভৃতির সাহায্যে ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয় কাজের মাধ্যমে যেসব প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ ও উপপৃষ্ঠীয় অংশের পরিবর্তন ঘটিয়ে বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠিত হয়, সেইসব প্রক্রিয়াকে একত্রে ভূমিরূপ গঠনের বহির্জাত প্রক্রিয়া বলে।

৩. বহির্জাত প্রক্রিয়ার উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে ?
উত্তর :- বহির্জাত প্রক্রিয়াকে ইংরেজিতে 'Exogenous' বলে। এটি গ্রিক Exo (বহির্ভাগ) ও Genesis (উৎপত্তি) শব্দ দুটি থেকে উৎপন্ন হয়েছে, যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ 'বহির্জাত'।

৪. ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তর :- ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া দুই প্রকার, যথা - (১) অন্তর্জাত প্রক্রিয়া ও (২) বহির্জাত প্রক্রিয়া।

৫. বহির্জাত প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর :- বহির্জাত প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল - 
  1.  এটি একটি অত্যন্ত ধীর প্রক্রিয়া। 
  2. এটি ভূপৃষ্ঠের ওপরে ক্রিয়াশীল ভূমিরূপ পরিবর্তনকারী প্রক্রিয়া।
  3.  ভূপৃষ্ঠের বাইরের স্থিতিশীল ও গতিশীল প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা এটি সংঘটিত হয়। 
  4. এই প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে একটি সাধারণ তল গঠন করে।
  5.  এই প্রক্রিয়া ভূমিরূপের ভাস্কর্য তৈরি করে।
  6.  বহির্জাত প্রক্রিয়ায় শক্তির মূল উৎস হল সূর্য।
৬. বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যম বা শক্তিগুলি কত ধরনের ও কী কী ?
অথবা  , পর্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যম বা শক্তিগুলি কত ধরনের ও কী কী ?
অথবা  , ক্রমায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যম বা শক্তিগুলি কত ধরনের ও কী কী ?
উত্তর :- বহির্জাত প্রক্রিয়া বা পর্যায়ন বা ক্রমায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যম বা শক্তিগুলি দুই ধরনের, যথা -
  1. স্থিতিশীল প্রাকৃতিক শক্তি   : উষ্ণতা, বায়ুর চাপ, আর্দ্রতা, মেঘাচ্ছন্নতা, বৃষ্টিপাত, শিশির, কুয়াশা প্রভৃতি।
  2. গতিশীল প্রাকৃতিক শক্তি   : নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ, ভৌমজল, সমুদ্রস্রোত ও তরঙ্গ, সুনামি, জোয়ারভাটা প্রভৃতি।
৭. বহির্জাত প্রক্রিয়া কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তর :- বহির্জাত প্রক্রিয়া প্রধানত তিন প্রকার, যথা - (১) অবরোহণ প্রক্রিয়া (২) আরোহণ প্রক্রিয়া (৩) জৈবিক প্রক্রিয়া।

৮. অবরোহণ প্রক্রিয়া কাকে বলে ?
উত্তর :- বহির্জাত যেসব প্রাকৃতিক শক্তি ও প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের উঁচু জায়গাগুলিকে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে গিয়ে ক্রমশ নীচু হয়ে আসে, সেই প্রক্রিয়া বা প্রক্রিয়াগুলিকে একত্রে অবরোহণ বা ক্ষয়সাধন বলে।

৯. অবরোহণ কয়টি প্রক্রিয়ায় ঘটে ?
উত্তর :- ভূমিভাগের অবরোহণ প্রধানত তিনটি প্রক্রিয়ায় ঘটে, যথা - (১) ক্ষয়সাধন (২) অপসরণ বা বহন (৩) পুঞ্জিত স্খলন ।

১০. ক্ষয়সীমা কাকে বলে ?
উত্তর :- ক্ষয়কারী শক্তিসমূহ ভূপৃষ্ঠের নীচের দিকে যতটা পর্যন্ত ক্ষয় করতে সমর্থ হয় সেই সীমাকে ক্ষয়সীমা বলে।

           *সমুদ্রতল বা পৃষ্ঠ হল শেষ ক্ষয়সীমা।

১১. ক্ষয়সীমা ধারণার প্রবর্তক কে ?
উত্তর :- ভূতাত্ত্বিক জে. ডব্লিউ-পোয়েল (J. W. Powell) হলেন ক্ষয়সীমা ধারণার প্রবর্তক।

১২. অবক্ষেপণ বা সঞ্চয় কাকে বলে ?
উত্তর :- যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়জাত পলি বা শিলাচূর্ণ প্রভৃতি অপসারিত হয়ে বিভিন্ন অবনমিত বা নীচু অঞ্চলগুলিতে সঞ্চিত হয়, তাদের একত্রে অবক্ষেপণ বা সঞ্চয় বলে।

১৩. জৈবিক প্রক্রিয়া কাকে বলে ?
উত্তর :- উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষ ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরের আবহবিকার, পরিবহণ, ক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটিয়ে ভূপৃষ্ঠ সমতলীকরণ করে, তাদের একত্রে জৈবিক প্রক্রিয়া বলে।

১৪. অবরোহণ প্রক্রিয়া ও আরোহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো। 
উত্তর :- অবরোহণ প্রক্রিয়া ও আরোহণ প্রক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য :

বৈশিষ্ট্য 

অবরোহণ প্রক্রিয়া 

আরোহণ প্রক্রিয়া 

১. পরিচয়

যেসব প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পায় তাদের অবরোহণ প্রক্রিয়া বলে। 

যেসব প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের নীচু জায়গাগুলির উচ্চতা সামান্য বাড়ে বা ভরাট হয় তাদের আরোহণ প্রক্রিয়া বলে। 

২. নিয়ন্ত্রক

প্রাকৃতিক শক্তির ক্ষয় করার ক্ষমতা, ভূতাত্ত্বিক গঠন, ভূমির প্রকৃতি, আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের তীব্রতা প্রভৃতি। 

ভূমির ঢালের পরিমাণ, সঞ্চয়জাত পদার্থের জোগান ও পরিমাণ, আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পরিস্থিতি প্রভৃতি। 

৩. উচ্চতা

এই প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা হ্রাস পায়। 

এই প্রক্রিয়ায় পৃষ্ঠের উচ্চতা বেশ খানিকটা বৃদ্ধি পায়। 

৪. চরিত্র

এটি মূলত বিনাশমূলক প্রক্রিয়া। 

এটি মূলত গঠনমূলক প্রক্রিয়া। 

৫. উদাহরণ

ক্ষয়জাত বা অবশিষ্ট পর্বত, ক্ষয়জাত মালভূমি প্রভৃতি। 

বালুচর, ব-দ্বীপ প্রভৃতি।


👉 আমাদের Telegram চ্যানেলে Join হতে ভুলবেন না। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ