Anwar Study Point

সফলতার সাথী

Breaking

সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২

মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর


মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর 
দশম শ্রেণি ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর 
দশম শ্রেণি ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারণা ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর 
মাধ্যমিক ইতিহাস প্রথম অধ্যায় ২ নম্বরের সাজেশান

মাধ্যমিক/দশম শ্রেণি
ইতিহাস
প্রথম অধ্যায় : ইতিহাসের ধারণা
প্রতিটি প্রশ্নের মান : ২

১. ইতিহাস কী ?
উত্তর :- মানবসমাজের অতীত কাহিনি ইতিহাস নামে পরিচিত, এর বিভিন্ন দিক হল -
প্রথমত, এর মূল বিষয় হল সময়, মানুষ ও সমাজ অর্থাৎ, মানুষ ও তার সমাজের ক্রম বিবর্তনের ধারাবাহিক বর্ণনাই হল ইতিহাস। 
দ্বিতীয়ত, অতীতের রাজনৈতিক বিষয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কাজকর্মও ইতিহাসের অন্তর্গত। 
তৃতীয়ত, গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ও থুকিডিডিস যথাক্রমে 'ইতিহাসের জনক' ও 'বিজ্ঞানসম্মত ইতিহাসের জনক' নামে পরিচিত।

২. ইতিহাস তত্ত্ব কী ?
উত্তর :- ইতিহাস রচনার পদ্ধতি ও ইতিহাস বিষয়ে অনুসন্ধানের কলাকৌশল ইতিহাস তত্ত্ব নামে পরিচিত। ইতিহাস তত্ত্বের কয়েকটি দিক হল - গ্রিক ইতিহাস তত্ত্ব, রোমান ইতিহাস তত্ত্ব, খ্রিস্টান ইতিহাস তত্ত্ব, মধ্যযুগীয় ইতিহাস তত্ত্ব, রেনেসাঁ ইতিহাস তত্ত্ব ও আধুনিক ইতিহাস তত্ত্ব।

৩. আধুনিক ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝ ?
উত্তর :- অষ্টাদশ শতক থেকে শুরু করে বিংশ শতকের শেষ পর্যন্ত সময়কালের ইতিহাসচর্চা আধুনিক ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত।
প্রথমত, যুক্তিবাদ, প্রগতিবাদ, রোমান্টিক ভাবধারা ও বৈজ্ঞানিক ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে এই ইতিহাসচর্চা। 
দ্বিতীয়ত, বিজ্ঞানসম্মত, প্রাতিষ্ঠানিক ও পেশাজীবী ইতিহাসচর্চা হল আধুনিক ইতিহাসচর্চার মূল বৈশিষ্ট্য। 

৪. ঐতিহাসিকের কাজ কী ?
উত্তর :- ঐতিহাসিকের কাজ হল -
প্রথমত, তথ্য অনুসন্ধান, উপস্থাপন ও তা বিশ্লেষণ। 
দ্বিতীয়ত, ঐতিহাসিক লিওপোল্ড ভন র‌্যাঙ্কের মতে, যেমনভাবে ঘটনা ঘটেছিল ঠিক সেভাবেই তুলে রাখা হল ঐতিহাসিকের কাজ।
তৃতীয়ত, ঐতিহাসিক লর্ড অ্যাকটনের মতে, ঐতিহাসিকের দেওয়া তথ্যের ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ ছাড়া ইতিহাস অর্থহীন। 

৫. আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিগুলি চিহ্নিত করো।
উত্তর :- আধুনিক ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি হল - যুক্তিবাদী, আপেক্ষিকতাবাদী, দৃষ্টবাদী, মার্কসবাদী, প্রত্যক্ষবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। এছাড়াও রয়েছে অ্যানাল গোষ্ঠীর মতবাদ, জাতীয়তাবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, নিম্নবর্গীয় মতবাদ এবং সামগ্রিক সমাজ বিশ্লেষণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি।

৬. ইতিহাসচর্চায় 'অ্যানাল স্কুল' বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর :- বিশ শতকে ফ্রান্সে ঐতিহাসিক মার্ক ব্লখ ও লুসিয়েন ফেভর 'দ্য অ্যানালস' (১৯২৯ খ্রি.) পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ঘরানোর সূচনা করেন তা হল 'অ্যানাল স্কুল' ।
         এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় - প্রথমত, সামাজিক ইতিহাসসহ সার্বিক ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় ; দ্বিতীয়ত, ভৌগলিক কাঠামো, আর্থসমাজিক পটভূমি, জনসংখ্যাতত্ত্ব, মানসিক প্রবণতার ওপর গুরুত্ব দান করে ইতিহাস রচনার কাজ শুরু করা হয়।

৭. নিম্নবর্গের ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
অথবা, সাবল্টার্ন স্টাডিজ কী ?
উত্তর :- ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ গুহ নিম্নবর্গের ইতিহাস রচনা পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন যা সাবল্টার্ন স্টাডিজ নামে পরিচিত। এই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল -
প্রথমত, প্রচলিত ইতিহাসচর্চায় সমাজের উচ্চবর্গের ভূমিকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হত  ; কিন্তু এই ইতিহাষচর্চায় নিম্নবর্গ, অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক, শহুরে জনতা, আদিবাসী এবং সমাজের নিম্নস্তরের মানুষ ও মহিলাদের উদ্যোগে বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় আন্দোলনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, নিম্নবর্গের ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জ্ঞান পান্ডে, স্টিফেন হেনিংহাম, দীপেশ চক্রবর্তী, গৌতম ভদ্র, শাহিদ আমিন প্রমুখ। 

৮. মার্কসবাদী ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর :- বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের উদগাতা কার্ল মার্কসের অনুসৃত অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ, ঐতিহাসিক বস্তুবাদ  ও দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের ওপর ভিত্তি করে উনিশ শতক থেকে ইতিহাসচর্চায় যে নতুন ধারার সূচনা হয়েছে তা মার্কসবাদী ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত।
এই ইতিহাসচর্চার উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল -
প্রথমত, ইতিহাসকে বিশ্লেষণের সময় শোষক-শোষিত সম্পর্ক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উৎপাদনের ধরন এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, মার্কসবাদী ঐতিহাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন এরিক হবসবম, ক্রিস্টোফার হিল, রজনীপাম দত্ত, সুশোভন সরকার, ইরফান হাবিব প্রমুখ।

৯. সামাজিক ইতিহাস কী ?
উত্তর :- ১৯৬০ ও ১৯৭০ - এর দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত রাজনৈতিক, সামরিক, সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তে সমাজের অবহেলিত দিকগুলিসহ সমগ্র সমাজের ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় যা নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত। এই ইতিহাস সংশোধনবাদী ইতিহাস নামেও পরিচিত।
প্রথমত, এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল - সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, জাতি-বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ, হিংসা ও সম্প্রীতি।
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চায় যুক্ত গবেষকরা হলেন ইউজিন জেনোভিস, হারবার্ট গুটম্যান, রণজিৎ গুহ, জ্ঞানেন্দ্র পান্ডে, শাহিদ আমিন, সুমিত সরকার, গৌতম ভদ্র, দীপেশ চক্রবর্তী। 

১০. নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠান ও তার মুখপত্রের নাম কী ?
উত্তর :- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার প্রতিষ্ঠানটি হল 'দ্য সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন' (১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দ) । এটির মুখপত্র হল 'সোশ্যাল সায়েন্স হিস্ট্রি'।

১১. ইতিহাসচর্চা কি সত্যিই নিখুঁত ও বাস্তবসম্মত ?
উত্তর :- ইতিহাসচর্চা কতটা নিখুঁত ও বিজ্ঞানসম্মত সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। জার্মান লেখক উইলহেলম ডিলথে মনে করেন ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক এক সারিতে বসানো যায় না। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান, পরীক্ষানিরীক্ষার ওপর নির্ভর করেন আর ঐতিহাসিক তাঁর নিজস্ব ধ্যানধারণার ওপর ভিত্তি করে ইতিহাস লেখেন। ব্রিটিশ লেখক আর. জি. কলিংউড (১৮৮৯-১৯৪৩) তাঁর বিখ্যাত The Idea of History গ্রন্থে দেখিয়েছেন সমস্ত ঐতিহাসিক তাঁর সমসাময়িককালের ভাবনাচিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হন। ই. এইচ. কার অনুরূপভাবে মনে করেন ঐতিহাসিক তাঁর নিজের সময়ের আয়নায় অতীত ঘটনাক্রমকে বাছাই করেন।

১২. খেলার ইতিহাস বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর :- আধুনিক সভ্যতায় অবসর বিনোদন ও শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শনের একটি বিশেষ মাধ্যম হল খেলা বা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
প্রথমত, বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস, গলফ, দাবা, রাগবি প্রভৃতি খেলার উদ্ভব, বিবর্তন, প্রসার ও প্রভাব সম্পর্কে চর্চা শুরু হয় যা খেলার ইতিহাস নামে পরিচিত। 
দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন জে. এ. ম্যাসান, রিচার্ড হোল্ট, গ্রান্ট জারভিস, মাইকেল ম্যাক কিনলে, আশিস নন্দী, রামচন্দ্র গুহ, বোরিয়া মজুমদার ।

১৩. ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলার উদ্ভবকে কীভাবে চিহ্নিত করবে ?
উত্তর :- আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে ইংল্যান্ডে 'স্টিক অ্যান্ড বল' নামক খেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার উদ্ভব ঘটেছে।
প্রথমত, প্রাক-শিল্পবিপ্লব পর্বের এই খেলায় হাতে তৈরি কাঠের ব্যাট ও স্ট্যাম্প বেল, বল ব্যবহার করা হত এবং আঠারো শতকে এই খেলা একটি পরিণত খেলার চরিত্র লাভ করে।
দ্বিতীয়ত, ১৭৪৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ক্রিকেটের নিয়মবিধি রচিত হয়। ১৭৬০ - এর দশকে ইংল্যান্ডের হাম্বেলডন-এ প্রথম ক্রিকেট ক্লাব গঠিত হয় এবং ১৭৮০-র দশকে শুরু হল 'ক্রিকেটের অভিভাবক' রূপে পরিচিত মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব (MCC)।

১৪. ক্রিকেট খেলার প্রাথমিক পর্বের কয়েকটি দিক উল্লেখ করাে।
উত্তর :- ক্রিকেট খেলার গােড়ার দিকের কয়েকটি বিষয় হল— প্রথমত, নির্দিষ্ট মাপের বল ও ব্যাট এবং ২২ গজের পিচ ও উইকেট ব্যবহৃত হত।
দ্বিতীয়ত, খেলার মাঠের আকৃতি ডিম্বাকৃতি হলেও এর দৈর্ঘ্য বা আয়তনের কোনাে নির্দিষ্ট মাপ ছিল না। তৃতীয়ত, প্রথমদিকে এই খেলার সময়সীমা নির্দিষ্ট না থাকলেও পরে তিনদিনের টেস্ট বা নির্দিষ্ট ওভারের একদিনের ম্যাচ শুরু হয়।

১৫. ভারতে কীভাবে ক্রিকেট খেলার সূচনা হয় ?
উত্তর :- ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজদের হাত ধরেই ভারতে ক্রিকেট খেলার সূচনা হলেও তা ভারতস্থ ইংরেজ সামরিক বাহিনী ও শ্বেতাঙ্গদের ক্লাব বা জিমখানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীকালে প্রথমত, আঠারাে শতকের শেষে ভারতে প্রথম ক্রিকেট ক্লাব রূপে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ক্যালকাটা ক্রিকেট ক্লাব’ (১৭৯২ খ্রিস্টাব্দ) এবং ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাইয়ে পারসিদের ওরিয়েন্টাল ক্রিকেট ক্লাব। দ্বিতীয়ত, ভারতে হিন্দু, পারসি, মুসলিম ও খ্রিস্টান দলের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলানাে হত। 

১৬. ভারতে কীভাবে হকি খেলার সূচনা হয়?
উত্তর :- ভারতে মূলত ইংরেজ সৈন্যবাহিনীর হাত ধরেই হকি খেলার প্রসার ঘটে এবং কলকাতায় ভারতের প্রথম হকি ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয় (১৮৮৫-৮৬ খ্রিস্টাব্দ)। বিশ শতকে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে অলিম্পিক গেমসে ভারত প্রথম অংশগ্রহণ করে এবং শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলায় হল্যান্ডের কাছে ভারত ৩-০ গােলে পরাজিত হয়। ধ্যানচাঁদ ছিলেন ভারতের একজন বিখ্যাত হকি খেলােয়াড়।

১৭. কাকে এবং কেন ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়? 
উত্তর :-  নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয়, কারণ—

প্রথমত, তিনি কিশাের বয়সেই ফুটবলার রূপে এবং পরবর্তীকালে ‘বয়েজ ক্লাব,‘ফ্রেন্ডস ক্লাব’, ‘ওয়েলিংটন ক্লাব’ প্রভৃতির সংগঠকরূপে বাংলার ফুটবল খেলার ক্ষেত্রে এক নবজাগরণ আনেন।

দ্বিতীয়ত, দেশবাসীকে ফুটবল খেলার মাধ্যমে শারীরিকভাবে শক্তপােক্ত করে তুলে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছিলেন।

তৃতীয়ত, তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেই দুখীরাম মজুমদার, মন্মথ গাঙ্গলি, কালীচরণ মিত্তির ও হরিদাস শীল প্রমুখ ফুটবল খেলাকে জনপ্রিয় চেষ্টা করেন।

১৮. মােহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব বিখ্যাত কেন?
উত্তর :-  ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফুটবল খেলার একটি প্রতিষ্ঠান বা ক্লাবরূপে গড়ে ওঠে ‘মােহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব’। এই ক্লাব বিখ্যাত, কারণ—

প্রথমত, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আই, এফ, এ শিল্ড প্রতিযােগিতায় বুটপরা ইংরেজ খেলােয়াড়দের বিরুদ্ধে মােহনবাগান ক্লাবের খেলােয়াড়রা জয়লাভ করে।

দ্বিতীয়ত, এই ঘটনা ইংরেজ বিরােধী জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করে। সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটিয়েছিল। 

১৯. পোলো খেলার সূচনা ও বৈশিষ্ট্য লেখাে।
উত্তর :-  পােলাে খেলার উদ্ভব হয় ইংল্যান্ডে। ঘােড়ার পিঠে চেপে পােলাে স্টিকের সাহায্যে পােললা বলকে নিয়ন্ত্রণ করে বিপক্ষ দলকে পরাজিত করাই এই খেলার রীতি। ভারতে ইংরেজ শাসক ও সৈন্যদের মাধ্যমেই পােলাে খেলার প্রসার ঘটেছিল।

২০. খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চা বলতে কী বােঝায়? অথবা, খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চা আমাদের কী কী বিষয় জানতে সাহায্য করে?
উত্তর :- মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য ও খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত তথ্যাবলি আলােচনাই খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চা নামে পরিচিত।

 প্রথমত, এর মূল বিষয় হল দেশি ও বিদেশি খাবার গ্রহণ বা বর্জন, দেশজ ও ঔপনিবেশিক খাদ্যসংস্কৃতির মধ্যে সংঘাত, স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে খাদ্যাভ্যাস, বিভিন্ন ধরনের খাবারের উদ্ভব ও তার বিবর্তন আলােচনা।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষক হলেন—টমাস উইলসন, বব অ্যাসলে, বেন টেলর, জেফ্রে পিলজার, সিডনি মিনজ, হরিপদ ভৌমিক, তপন রায়চৌধুরী, শরিফউদ্দিন আহমেদ, কে. টি. আচয়।

২১. ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে খাদ্যাভ্যাসে কী পরিবর্তন হয় ?
উত্তর :-  ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে খাদ্যাভাসে উল্লেখযােগ্য পরিবর্তনগুলি হল—

প্রথমত, ভারতীয়রা ভাত, ডাল, সবজি, রুটি ও আমিষ (মাছ, মাংস) খাবারের পাশাপাশি পাশ্চাত্য খাবারের প্রতিও আকৃষ্ট হয়।

দ্বিতীয়ত, বিদেশি খাবারের প্রতি এই আকর্ষণ শহরে বসবাসকারী ইংরেজি শিক্ষিত উচ্চবিত্ত (শিক্ষক, ডাক্তার, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও জমিদার শ্রেণি) শ্রেণির একাংশের মধ্যেই সীমিত ছিল।

তৃতীয়ত, এঁরা শাসক ইংরেজদের ভােজসভায় উপস্থিত হয়ে এদেশীয় সামাজিক বিধিনিষেধ ভেঙে নিষিদ্ধ মাংস, চা, কফি, সিগারেট ও মদ্যপান করত।

২২. ভারতের রন্ধনশৈলী কী?
উত্তর :-  ভারতে মূলত চার ধরনের রন্ধনশৈলী রয়েছে, যেমন - 
প্রথমত, উত্তর ভারতীয় রন্ধনশৈলী (বেনারস, কাশ্মীর, দিল্লি, পাঞ্জাব ও রাজস্থান);

দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ ভারতীয় রন্ধনশৈলী (অন্ধপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল ও তামিলনাড়ু);

তৃতীয়ত, পূর্ব ভারতীয় রন্ধনশৈলী (বাংলা ও অসম);

চতুর্থত, পশ্চিম ভারতীয় রন্ধনশৈলী (মহারাষ্ট্র, মালব গুজরাট)।

       খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাসচর্চায় ভারতীয় খাবার ও রন্ধনশৈলী বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান লাভ করেছে। কারণ ভারতীয় রন্ধনপ্রণালীর মধ্যে যে ব্যাপক বৈচিত্র্য রয়েছে, তা সমগ্র ইউরােপের রন্ধনশৈলীর সঙ্গে তুলনীয়।

২৩. ঢাকাই খাবার কী?
উত্তর :-  সুলতানি ও মুঘল শাসনকালে বাংলার প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসে (ভাত, ডাল ও নিরামিষ খাবার) পরিবর্তন এসেছিল। পুরাতন ঢাকা এলাকায় অযােধ্যার নবাবী খাবারের (কাবাব, নান, কাচ্চি ও পাক্কি বিরিয়ানী, হালিম, মাটন, ভুনি-খিচুড়ি) প্রচলন ঘটে। এর পাশাপাশি ভাতের সঙ্গে সরষের তেল, ঘি ও বিভিন্ন মশলা সহযােগে বিভিন্নধর্মী তরকারি ও ইলিশ, পাবদা, রুই, চিতল, ভেটকি মাছের বিভিন্ন পদও প্রচলিত ছিল। এই বৈচিত্র্যময় খাবার ঢাকাই খাবার নামে পরিচিত। ,

২৪. শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে কী বােঝায়?
উত্তর :-  মানুষ যখন কোনাে শিল্প মাধ্যম, যথা—(সংগীত, নৃত্য, নাটক ও চলচ্চিত্র)-কে বেছে নিয়ে তার সুকুমার বৃত্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তখন তা শিল্পচর্চা নামে পরিচিত। তাই - 

প্রথমত, শিল্পচর্চার উদ্ভব, বিবর্তন ও প্রভাব সম্পর্কে আলােচনা করাই শিল্পচর্চার ইতিহাস নামে পরিচিত।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন—ক্যারল ওয়েলস, ফিলিপ বি জারিল্লি, জ্যাকব বুখাহার্ট, নীহাররঞ্জন রায়, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অশােক মিত্র, হিতেশরঞ্জন সান্যাল, তপতী গুহঠাকুরতা। 

২৫. নৃত্যশিল্পের ইতিহাসের কয়েকটি দিক চিহ্নিত করো। 
উত্তর :-  নৃত্যকলাচর্চার উদ্ভব, বিবর্তন ও তার প্রভাব সংক্রান্ত ইতিহাসচর্চা নৃত্যশিল্পের ইতিহাস নামে পরিচিত। এর কয়েকটি দিক হল—

প্রথমত, ছন্দ বা গানের তালে তালে মানবশরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালনই হল নৃত্য।

দ্বিতীয়ত, শাস্ত্রীয় ও ধর্মীয় নৃত্যের পাশাপাশি ভাবাবেগ প্রকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের নৃত্য (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিপ-হপ নৃত্য, চিনের ইয়াংকো নৃত্য, ভারতের কন্থক, ফ্রান্স ও রাশিয়ার ব্যালে নৃত্য) রয়েছে।

তৃতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যারা যুক্ত তারা হলেন—ক্যারল ওয়েলস, ফিলিপ বি জারিল্লি, জ্যাকব বুখাহার্ট, চার্লস রাসেল ডে, তপতী গুহঠাকুরতা।

২৬. চলচ্চিত্রের ইতিহাস বলতে কী বােঝায়?
উত্তর :-  উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে উন্নত ক্যামেরার মাধ্যমে সচল ছবি তােলার প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন ঘটে এবং অগাস্ট লমিয়ের ও লুই লুমিয়ের নামক দুই ভাইয়ের হাত ধরে প্যারিসে প্রথম চলচ্চিত্রের উদ্ভব ঘটে (১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ)।

প্রথমত, প্রথমদিকে কোনাে ঘটনা বা গল্পকে কেন্দ্র করে তৈরি এই সচল ছবি ছিল নির্বাক, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশ শতকের গােড়ায় আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে সবাক ও সচল ছবি তৈরি হয়, যা চলচ্চিত্র নামে পরিচিত।

দ্বিতীয়ত, চলচ্চিত্রের উদ্ভব ও বিবর্তন সম্পর্কে বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন—ফিলিপ বি জারিল্লি, চার্লস রাসেল ডে, সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিককুমার ঘটক, গিরিশ কারনাড, আদুর গােপালকৃষ্ণন প্রমুখ। 

২৭. ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রাথমিক ইতিহাস কীভাবে চিহ্নিত করবে?
উত্তর :- ঔপনিবেশিক শাসনপর্বে ভারতে ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে হরিশ্চন্দ্র সখারাম ভাতওয়াডেকর ‘দ্য রেস্টলারস’ নামক একটি সচল ও নির্বাক ছবি নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে ধুন্দিরাজ গােবিন্দ ফালকে তৈরি করেন ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ নামক চলচ্চিত্র (১৯১৩ খ্রি.)। তবে ‘আলম আরা’ চলচ্চিত্রটি ছিল (১৯৩১ খ্রি.) ভারতের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র। ভারতে হীরালাল সেন প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন এবং এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেন রয়্যাল বায়ােস্কোপ কোম্পানি।

২৮. বাংলা চলচ্চিত্রের আদিপর্বের ইতিহাস বিশ্লেষণ করাে।
উত্তর :- ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতে সিনেমা বা চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি বাংলা ভাষাতেও চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রথম বাংলা ছবি বিল্বমঙ্গল’ ছিল নির্বাক ছবি, কিন্তু ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায় জামাইষষ্ঠী’ নামক সবাক ছবি। পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিককুমার ঘটক, মৃণাল সেনের হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্র পরিণত হয়ে ওঠে এবং সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী’ দেশ ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি লাভ করে।

২৯. সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত কেন?
উত্তর :- সত্যজিৎ রায় বিখ্যাত ছিলেন, কারণ—

প্রথমত, সত্যজিৎ রায় ছিলেন একাধারে চিত্রশিল্পী, সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ও বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অস্কার পুরস্কার প্রাপক |

দ্বিতীয়ত, বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকদের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বাগ্রগণ্য, কারণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে তিনি পথের পাঁচালি’ নামক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্বীকৃত ও প্রশংসা লাভ করে।

তৃতীয়ত, তার অন্যান্য চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘অপুর সংসার’, শাখাপ্রশাখা’, ‘নায়ক’, ‘আগন্তুক।

৩০. পােশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাস কী?
উত্তর :- পােশাক-পরিচ্ছদের উদ্ভব ও তার বিবর্তনকে চিহ্নিত করা এবং পােশাক কীভাবে কর্তৃত্ব ও আভিজাত্যের মাপকাঠি হয়ে উঠেছিল তা ব্যাখ্যা করাই হল পােশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাস। এই ইতিহাসের দিকগুলি হল—

প্রথমত, ভৌগােলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক অভিরুচি, সামাজিক রীতি কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পােশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রকে প্রভাবিত তা চিহ্নিত করা এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেনম্যাথেউস সােয়ার্জ, কার্ল কোহলার, এম্মা টারলাে, এল টেলর, পিটার ম্যাকনিল, রবার্ট রস, মলয় রায়।

৩১. পােশাক-পরিচ্ছদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধির ধারণাটি কী?
উত্তর :- আঠারাে ও উনিশ শতকে ইউরােপের কয়েকটি দেশে প্রচুর কাপড় দিয়ে মেয়েদের পােশাক তৈরি হলেও অত্যন্ত আঁটোসাঁটো সেই পােশাক স্বাচ্ছন্দ্যের বদলে অস্বস্তিই তৈরি করত। এইসব পােশাক মেয়েদের অসুস্থতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই শরীরের পক্ষে আরামদায়ক এবং হাঁটাচলার সুবিধার্থে পােশাক-পরিচ্ছদ রীতিতেও পরিবর্তন আসে।

৩২. উনিশ শতকে ভারতে পারসি ও বাঙালিবাবুদের পােশাক কেমন ছিল?
উত্তর :- উনিশ শতকে ক্রমশ ভারতে পাশ্চাত্যরীতির পােশাক-পরিচ্ছদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং এক্ষেত্রে প্রথমে পারসি ও পরে বাঙালি বাবুদের পােশাক-পরিচ্ছদে পরিবর্তন আসে। পারসিরা ঢােলা ফুল প্যান্ট ও কলারবিহীন লম্বা কোট পরত। আবার বাঙালিবাবুরা ধুতির ওপর কোট, মাথায় টুপি ও পায়ে বুট জুতাে ব্যবহার করত।

৩৩. যানবাহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার ইতিহাস বলতে কী বােঝ?
উত্তর :- এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত ও বার্তা বিনিময়ের জন্য জল, স্থল বা আকাশপথে ব্যবহৃত যানবাহন এবং ডাকব্যবস্থা, টেলি যােগাযােগ ব্যবস্থা, ইনটারনেট প্রভৃতি ক্ষেত্রের বিবর্তন সংক্রান্ত আলােচনাকেই বলা হয় যানবাহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার ইতিহাস। এই ইতিহাসচর্চায়—

প্রথমত, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের ওপর যানবাহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার প্রভাবকে চিহ্নিত করা হয়।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন—জন আর্মস্ট্রং, কলিন ডিভাল, অ্যানডু স্কট, টমাস জেল্লের, ডেভিড ব্রানডন, উইলিয়াম আর নেস্ট, সুনীল কুমার মুনসি, নীতিন সিনহা।

৩৪. ভারতে রেলপথ ব্যবস্থার প্রবর্তন কীভাবে হয়?
উত্তর :- মূলত অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্যে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে রেলপথ ব্যবস্থার প্রবর্তন করে (২৬ এপ্রিল, ১৮৫৩ খ্রি.)। প্রথমে মহারাষ্ট্রের বােম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ছিল এর ব্যাপ্তি। পরবর্তীকালে ‘গ্যারান্টি প্রথার মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন স্থানে রেলপথের বিকাশ ঘটে।

৩৫. ভারতে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার প্রবর্তন কীভাবে হয় ?
উত্তর :- ভারতে রেলপথের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামরিক প্রয়ােজনে টেলিগ্রাফের বিস্তার ঘটেছিল। ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রথমে কয়েক মাইল জুড়ে টেলিগ্রাফের বিস্তার ঘটলেও ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে ৪৬টি টেলিগ্রাফ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং ৪,২৫০ মাইল এলাকা টেলিগ্রাফ যােগাযােগের আওতায় আসে।

৩৬. নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলায় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান কী ছিল? অথবা আধুনিক বাংলার দৃশ্যশিল্পের বিকাশে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান লেখাে।
উত্তর :-  নব্যবঙ্গীয় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ, যেমন—

প্রথমত, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমে ইউরােপীয় রীতিতে ছবি আঁকতেন, কিন্তু এই রীতির পরিবর্তে চিত্রশিল্পে দেশীয় ঐতিহ্য প্রবর্তন করে বেঙ্গল বা ওরিয়েন্টাল আর্টের ভিত্তি স্থাপন করেন।

দ্বিতীয়ত, প্রাচীন ভারতের অজন্তা চিত্রকলা এবং মুঘল, রাজপুত চিত্রশৈলীর মিশ্রণ ঘটিয়ে তিনি এক নতুন ঘরানার চিত্ররীতির উদ্ভব ঘটান।

তৃতীয়ত, তিনি ইন্ডিয়ান সােসাইটি অব ওরিয়েন্টাল আর্ট (১৯০৭ খ্রিঃ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস নিয়ে বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’ নামক একটি গ্রন্থও রচনা করেন। 

৩৭. স্থানীয় ইতিহাস বলতে কী বােঝায়? স্থানীয় ইতিহাসের প্রায়ােগিক বৈশিষ্ট্য কী ?
উত্তর :- ভৌগােলিকভাবে স্থানীয় প্রেক্ষিতে স্থানীয় সম্প্রদায়, ব্যক্তি বা বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ইতিহাসই হল স্থানীয় ইতিহাস। এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্যগুলি হল—

প্রথমত, স্থানীয় জনশ্রুতি, মিথ বা অতিকথন, মৌখিক পরম্পরাকে ভিত্তি করে স্থানীয় ইতিহাস রচনা করা হয় এবং বিভিন্ন স্থানীয় ইতিহাসের সমন্বয়ে দেশের ইতিহাস গড়ে তােলার চেষ্টা করা হয়।

দ্বিতীয়ত, এই ধরনের ইতিহাসের ঐতিহাসিকরা হলেন— ডেভিড লুডেন, সতীশচন্দ্র মিত্র, কালিকমল সাৰ্বভৌম, নীহাররঞ্জন রায়, জি এস সরদেশাই, মুন্সি সােহনলাল, নিখিলনাথ রায়, যােগেশচন্দ্র বসু প্রমুখ।

৩৮. ইতিহাসচর্চায় স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী ?
উত্তর :-  স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব হল—

প্রথমত, এই ইতিহাসের মাধ্যমে অনালােকিত বিশেষ বিশেষ স্থানের পারিবারিক ও লােকপরম্পরার ইতিহাস, শিল্প স্থাপত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস জানা সম্ভব হয়।

দ্বিতীয়ত, স্থানীয় ইতিহাস যেহেতু একটি অঞ্চলের যেমন গ্রামের বা শহরের ইতিহাস তাই এই ইতিহাসের পরিসর সীমিত। কিন্তু বৃহত্তর জাতীয় ইতিহাস স্থানিক ইতিহাসের ওপরেও প্রভাব ফেলে।

৩৯. শহরের ইতিহাস কী ?
উত্তর :- শহরের উদ্ভব, বিকাশ, বিস্তার ও অবক্ষয় সম্পর্কিত তথ্যের চর্চা হল শহরের ইতিহাস। এই ইতিহাসের দিকগুলি হল—

প্রথমত, শহরের বাসিন্দা ও তাদের সমাজবিন্যাস এবং তাদের কার্যকলাপসহ শহরের আর্থ-রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে চিহ্নিত করা।

দ্বিতীয়ত, ১৯২০-র দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শহরের ইতিহাসচর্চার সূচনা হয়; শহরের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ঐতিহাসিকরা হলেন-স্টিফেন থানস্টর্ম, এডুইন বারােজ, মাইক ওয়ালেস, কলিন জোনস, রােনাল্ড টেলর, ক্রিস্টিন ডরিন, নারায়ণী গুপ্ত, রীনা ওল্ডেনবার্গ।

৪০. সামরিক ইতিহাস বলতে কী বােঝায় ?
উত্তর :- প্রাচীনকাল থেকে সংঘর্ষের মাধ্যমে ইতিহাসের গতি বয়ে চলেছে। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট, যুদ্ধাস্ত্রের বিবর্তন, সামরিক বাহিনীর প্রকৃতি ও সমরকুশলতা, যুদ্ধের প্রকৃতি ও প্রভাবকে তুলে হল সামরিক ইতিহাস। এই প্রসঙ্গে - 

প্রথমত, পেলােপনেসীয় যুদ্ধ, রামায়ণ ও মহাভারতের যুদ্ধসহ প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ঠান্ডা যুদ্ধের এই ইতিহাসচর্চায় স্থান পেয়েছে।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসের গবেষকরা হলেন—শেলফোর্ড বিডওয়েল, জন টেরাইন, রিচাড কন, যদুনাথ সরকার, সুরেন্দ্রনাথ সেন, এ জে পি টেলর, বিবেকানন্দ মুখােপাধ্যায়, কৌশিক রায়। 

৪১. পরিবেশের ইতিহাস কী ? 
উত্তর :- পরিবেশের অর্থাৎ, প্রকৃতি জগতের সঙ্গে মানবসমাজের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ইতিহাসই হল পরিবেশের ইতিহাস। এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল—

প্রথমত, সুপ্রাচীন কালে মানুষের আবির্ভাব হয়। পশুশিকারি জীবন থেকে আধুনিক মানবসভ্যতার উত্তরণের পিছনে পরিবেশের ভূমিকা ও অবদানকে চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের মূল বৈশিষ্ট্য।

দ্বিতীয়ত, ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিবেশ সংক্রান্ত আলােচনা থেকেই পরিবেশের ইতিহাসচর্চা শুরু হয়েছে; এই ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন-র্যাচেল কারসন, ডেভিড আরনল্ড, রামচন্দ্র গুহ, মাধব গ্যাডগিল, রিচার্ড গ্রোভ, স্যামুয়েল পি হাইজ, অ্যান্ড্রু সি ইসেনবার্গ, আলফ্রেড ডব্লিউ ক্রুস।

৪২. পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী ? 
উত্তর :- পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্বগুলি হল—

প্রথমত, মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে পরিবেশের ভূমিকা চিহ্নিত করে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করা।

দ্বিতীয়ত, পরিবেশ সংকট ও তার প্রকৃতি, পরিবেশ বিপর্যয় ও তার ভয়াবহতা, বাসস্থানের সুস্বাস্থ্য, অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও তার প্রয়ােগের ব্যবস্থা করা।

তৃতীয়ত, পরিবেশের ইতিহাসের সঙ্গে ইতিহাসের অন্য দিকগুলির সম্পর্ক নির্ধারণ ।

৪৩. ভারতে সংগঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলনের নাম লেখাে।
উত্তর :- ভারতে অনুষ্ঠিত দুটি পরিবেশ আন্দোলন হল—

প্রথমত, ১৯৬০-এর দশকে উত্তরপ্রদেশের আদিবাসী নারী-পুরুষ, সরলা বেন ও সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে অরণ্য সংরক্ষণ আন্দোলন গড়ে ওঠে যা ‘ চিপকো আন্দোলন' নামে পরিচিত।

দ্বিতীয়ত, উত্তরাখণ্ডের গাড়ােয়াল জেলায় ভাগীরথী ও ণী ভীলাঙ্গনা নদীর সংযােগস্থলে অবস্থিত তেহেরি শহরকে জনমুক্ত করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তােলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে এর বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষার যে আন্দোলন গড়ে ওঠে তা ‘তেহেরি গাড়ােয়াল আন্দোলন (১৯৬০-২০০৪ খ্রিস্টাব্দ) নামে পরিচিত।

৪৪. বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস বলতে কী বােঝায় ?
উত্তর :- বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের বিকাশ ও বিবর্তন, প্রযুক্তির উদ্ভব ও তার অগ্রগতি এবং চিকিৎসাবিদ্যার বিবর্তন সম্পর্কিত ইতিহাসচর্চা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস নামে পরিচিত। এই ইতিহাসের মূল কথা হল—

প্রথমত, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যা কীভাবে মানবসমাজ ও সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে তার অগ্রগতির পরিমাপ করা।

দ্বিতীয়ত, আদিম সভ্যতা থেকে আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার উত্তরণই হল এই ইতিহাসচর্চার পরিধি; এই ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন—টমাস কুন, সি ডি ড্যামপিয়ার, আই. গােল্ডস্টাইন, জে ডি বারনাল, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডেডিভ আরনল্ড, এস জি ব্রাস, দীপককুমার, আর্নস্ট মেয়র। 

৪৫. নারী-ইতিহাস কী ?
উত্তর :- প্রচলিত পুরুষকেন্দ্রিক ইতিহাসের সংশােধন ঘটিয়ে সমাজ ও সভ্যতার ইতিহাসে নারীর অবদান ও ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন সংক্রান্ত ইতিহাসচর্চাই হল নারী-ইতিহাস। এই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য হল - 

প্রথমত, প্রথমদিকে প্রভাবশালী নারীদের সম্পর্কে ইতিহাসচর্চা করা হলেও বর্তমানে সাধারণ নারীরাও এর অন্তর্গত।

দ্বিতীয়ত, সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর ভূমিকা ও অংশগ্রহণকে চিহ্নিত করাই এই ইতিহাসের প্রধানতম দিক।

তৃতীয়ত, নারী-ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত গবেষকরা হলেন—মেরি ওলস্টনস্ক্রাফট, সিমােন দ্য বােভােয়ার, জি লার্নের, বারবারা কান, স্টিভেন মিনজ, লুই এ টিল্লি, জেরাল্ডিন ফরবেশ, শমিতা সেন, নীরা দেশাই।

৪৬. নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব আলােচনা করাে। 
উত্তর :- নারী ইতিহাসচর্চার উল্লেখযােগ্য গুরুত্ব হল—

প্রথমত, সভ্যতার ইতিহাসে রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে। দ্বিতীয়ত, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ও নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় এই ইতিহাসচর্চা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

তৃতীয়ত, ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত ইতিহাসের সংশােধন করতে চেয়ে নারী-ইতিহাস এক বিকল্প ইতিহাসচর্চার সন্ধান দিয়েছে।

৪৭. দ্য সেকেন্ড সেক্স’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে? গ্রন্থটির আলােচ্য বিষয় কী ?
উত্তর :- ‘দ্য সেকেন্ড সেক্স' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন সিমােন দ্য বােভােয়ার। এই গ্রন্থটির আলােচ্য বিষয় হল—

প্রথমত, পিতৃতান্ত্রিক সভ্যতায় নারীর বঞনা ও অধিকারহীন অবস্থানের ব্যাখ্যা করা হয়েছে;

দ্বিতীয়ত, পুরুষ কখনও নারীকে মানুষ হয়ে উঠতে দেয়নি, তাই নারী যতদিন নারী হয়ে থাকবে ততদিন প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবে না;

তৃতীয়ত, তিনি বলেছেন, “কেউ নারী হয়ে জন্ম নেয় না, বরং হয়ে ওঠে।

৪৮. আধুনিক ভারত ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদানগুলি কী কী ?
উত্তর :- আধুনিক ভারত ইতিহাসচর্চার প্রধান উপাদানগুলি হল

প্রথমত, সরকারি নথিপত্র অর্থাৎ, পুলিশ, গােয়েন্দা, সরকারি অফিসার বা আধিকারিকদের প্রতিবেদন, বিবরণ, চিঠিপত্র; এগুলি হল ইতিহাসচর্চায় প্রাথমিক উপাদান বা সূত্র।

দ্বিতীয়ত, গৌণ উপাদানগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, চিঠিপত্র, সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্র ।

তৃতীয়ত, ফোটোগ্রাফি, মুখের কথা, চলচ্চিত্র, মানচিত্র, রেফারেন্স বই, দৃশ্যশিল্প ও ব্যক্তিগত ডায়েরিও ভারত ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

৪৯. সরকারি নথিপত্র থেকে কীভাবে ইতিহাস রচনা করা যায়? অথবা, ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রের দুটি গুরুত্ব লেখাে।
উত্তর :- সরকারি নথিপত্র ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ—

প্রথমত, সরকারি নথিপত্র থেকে বিদ্রোহ ও বিদ্রোহের লক্ষ্য বা বৈপ্লবিক কার্যকলাপ ও তার উদ্দেশ্য বা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংগ্রামের কথা জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, নথি থেকে শিক্ষার প্রসার, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা এবং এইসব বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানা যায়।

তবে সরকারি নথিপত্রগুলি যেহেতু সরকার ও প্রশাসকের দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা তাই এগুলি ব্যবহারের সময় সতর্ক হওয়া প্রয়ােজন।

৫০. মহাফেজখানা কী ?
উত্তর :- সরকারি নথিপত্র সংরক্ষণকেন্দ্র মহাফেজখানা বা লেখ্যাগার বা আর্কাইভস নামে পরিচিত। এখানে সাধারণ ও গােপন নথিপত্র (পুলিশ, গােয়েন্দা ও স্বরাষ্ট্র বিভাগের) থাকে। স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় সরকারের নথি সংরক্ষণাগার রূপে দিল্লিতে গড়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মহাফেজখানা এবং রাজ্যস্তরে রাজ্য-মহাফেজখানা। ভারতের স্বদেশি আন্দোলন, অসহযােগ, আইন অমান্য ও ভারত ছাড়াে আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্দোলনের প্রাথমিক উপাদান মহাফেজখানায় রয়েছে।

৫১. সরকারি নথিপত্র ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বনের কারণ কী ?
উত্তর :- সরকারি নথিপত্র ব্যবহারকালে সতর্কতা অবলম্বনের কারণগুলি হল—

প্রথমত, এগুলি মূলত সাম্রাজ্যবাদী ও প্রশাসকের দৃষ্টিভঙ্গিতে। রচিত হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ঘটনার সঠিক ভাষ্য পাওয়া। যায় না।

দ্বিতীয়ত, সরকারি রিপাের্ট একপেশে হওয়ায় সমসাময়িক সাহিত্য, সংবাদপত্র প্রভৃতি থেকে সত্য যাচাই করে নেওয়া প্রয়ােজন।

৫২. আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা কী ?
উত্তর :- আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা হল ব্যক্তির জীবন ও স্মৃতিমূলক সাহিত্য। ব্যাখ্যা করে বলা যায়—

প্রথমত, এখানে লেখক তার জীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা এবং সমসাময়িক দেশকালের স্মৃতি রােমন্থন করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন।

দ্বিতীয়ত, এ প্রসঙ্গে বিপিনচন্দ্র পালের ‘সত্তর বছর’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি’ ও সরলাদেবী চৌধুরানির ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনীর কথা বলা যায়।

৫৩. আত্মজীবনী কীভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে ?
 অথবা, স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার উপাদানরূপে ব্যবহার করা হয় ? 
উত্তর :- আধুনিক ইতিহাসচর্চার উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম হল বিভিন্ন ব্যক্তির আত্মজীবনী, কারণ—

প্রথমত, এ ধরনের রচনায় সমাজের নানান স্তরের মানুষের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ থাকে, যেগুলি তারা ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এই ঘটনাগুলির মাধ্যমে সমকালের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ধরা থাকে।

দ্বিতীয়ত, এগুলি থেকে সেই সময়কার সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি প্রভৃতি সম্পর্কে নানান তথ্য ও ধারণা পাওয়া যায় এবং এ কারণেই এগুলি পরােক্ষ বিষয় নয় তা প্রত্যক্ষ বিষয়।

তৃতীয়ত, তবে আত্মজীবনী মানেই ইতিহাসের উপাদান নয়, কারণ এগুলিতেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন পড়ে যা ইতিহাসের উপাদান হয়ে ওঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

৫৪. বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী সত্তর বৎসর থেকে কীভাবে স্বায়ত্তশাসনের ধারণা পাওয়া যায় ?
উত্তর :- বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী ‘সত্তর বৎসর থেকে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের কলকাতায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মতাদর্শের উদ্ভবের ইতিহাস জানা যায়। বিপিনচন্দ্র তার এই আত্মজীবনীর ছাত্রাবাস না জনরাজ্য’ অংশে দেখিয়েছেন কলকাতায় মেসগুলিতে তখন ছাত্ররা গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে মেস ম্যানেজার নির্বাচন করে দায়বদ্ধতার সঙ্গে নিজেদের মেস-জীবন পরিচালনা করত। এভাবে গড়ে ওঠা গণতান্ত্রিক ধারণা থেকেই ভারতে স্বায়ত্তশাসনের ধারণার ইতিহাসের উপাদান পাওয়া যায়।

৫৫. জীবনস্মৃতি থেকে উনিশ শতকের বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার ইতিহাসের কী কী উপাদান। পাওয়া যায় ?
উত্তর :- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আত্মজীবনী 'জীবনস্মৃতি' থেকে - 

প্রথমত, উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের ঔপনিবেশিক শিক্ষার কথা জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, এই গ্রন্থের ‘ শিক্ষারম্ভ’ প্রভৃতি অধ্যায়ের বর্ণনা থেকে ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও নর্মাল স্কুল-এর শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।

তৃতীয়ত, ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে বদ্ধ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কবিহীন ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথা জানা যায়।

৫৬. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'জীবনস্মৃতি’ কীভাবে ব্যক্তি ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে উপাদান সরবরাহ করে ? 
উত্তর :- জীবনস্মৃতি' গ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যক্তিজীবনের আধারে রচিত হয়েছিল, কারণ—

প্রথমত, এই গ্রন্থ থেকে রবীন্দ্রনাথের ছােটোবেলায় ‘ শিক্ষারম্ভ’ ও তাঁর সাহিত্যচর্চা এবং ঠাকুরবাড়ির স্বাদেশিকতা, নীতিচর্চার কথা জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, ব্রাত্ম আন্দোলন সহ ধর্মসংস্কার ও জাতীয়তাবাদের বিকাশের কথাও জানা যায় এই গ্রন্থে।

তৃতীয়ত, এই গ্রন্থ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভারতের বাইরে ভ্রমণের কথা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলির আর্থসামাজিক ও সংস্কৃতির কথা জানা যায়।

৫৭. ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনী থেকে উনিশ শতকের বাংলার সামাজিক ইতিহাস কীভাবে জানা যায় ?
উত্তর :- সরলাদেবী চৌধুরানির ‘জীবনের ঝরাপাতা’ নামক আত্মজীবনী থেকে - 

প্রথমত, উনিশ ও বিশ শতকের বাংলার অভিজাত পরিবারের কায়দাকানুন, এবং দুধ-মা, ধাইমার মাধ্যমে সন্তান প্রতিপালন ব্যবস্থা প্রভৃতির কথা জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, সমাজে নারীর আচার-ব্যবহার কেমন ছিল সে। সম্পর্কেও জানা যায়।

তৃতীয়ত, নারীশিক্ষার কথা, বাঙালি সংস্কৃতির ও সাহেবি সংস্কৃতির কথা এবং ব্রাত্মধর্ম ও ব্রাহ্রসমাজের কথাও রয়েছে এই গ্রন্থে ।

৫৮. জীবনের 'ঝরাপাতা’ গ্রন্থটিতে কার জীবনী ফুটে উঠেছে? তাঁর সম্পর্কে কী জানাে ?
উত্তর :- জীবনের 'ঝরাপাতা’ গ্রন্থটিতে সরলাদেবী চৌধুরানির জীবনী ফুটে উঠেছে।
          সরলাদেবী চৌধুরানি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগনি ও একজন জাতীয়তাবাদী নেত্রী। তিনি দেশপ্রেম ও স্বাদেশিকতার জাগরণের জন্য বীরাষ্টমী ব্রত’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’, ‘প্রতাপাদিত্য উৎসব’ ও ‘উদয়াদিত্য উৎসব’ সংগঠিত করেছিলেন। 

৫৯. জওহরলাল নেহরুর চিঠিপত্র কীভাবে দেশীয় রাজ্যগুলির ইতিহাস রচনায় উপাদান সরবরাহ করে ?
উত্তর :- কন্যা ইন্দিরাকে লেখা জওহরলাল নেহরুর চিঠি থেকে আধুনিক ভারতের দেশীয় রাজ্যগুলির ইতিহাস জানা যায়, যেমন - 

প্রথমত, তিনি এই গ্রন্থে দেশীয় প্রজাদের অর্থে দেশীয় রাজাদের বিলাসব্যসন ও শৌখিন গাড়ি চড়ার সমালােচনা করেছেন।

দ্বিতীয়ত, প্রজাদের অন্নকষ্ট, শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাবের কথাও জানা যায় এই গ্রন্থ থেকে।

তৃতীয়ত, দেশীয় রাজ্যের কৃষকসহ ভারতীয় কৃষকদের উৎপাদিত তুলাে চলে যেত ইংল্যান্ডে এবং তা থেকে উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য ভারতে আসত যা ছিল সময় ও অর্থের অপচয়।

৬০. ফোটোগ্রাফ কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান হয়ে উঠেছে ? 
উত্তর :- ফোটোগ্রাফগুলি ভারতের আধুনিক ইতিহাসচর্চার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ— 

প্রথমত, আধুনিক ভারতের ইতিহাসে ১৮৫০-এর দশক থেকে ভারতের বিদ্রোহ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, আর্থসামাজিক ক্ষেত্র-সহ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন দিককে ফোটোগ্রাফির মাধ্যমে ধরে রাখা শুরু হয়।

দ্বিতীয়ত, আবার বিশ শতকে মহাত্মা গান্ধি, সুভাষ বসুর আন্দোলনসহ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন এবং দেশভাগের যন্ত্রণার মুহূর্তকেও ফোটোগ্রাফির মাধ্যমে ধরে রাখা হয়েছে।

তৃতীয়ত, ফোটোগ্রাফগুলিতে ব্যক্তিদের পােশাক, দাঁড়ানাের ভঙ্গি, মনােভাব বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান জানা যায়।

৬১. আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানরূপে ফোটোগ্রাফের সীমাবদ্ধতা কী ?
উত্তর :- আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানরূপে ফোটোগ্রাফের সীমাবদ্ধতাগুলি হল—
প্রথমত, ফোটোগ্রাফের বিষয়টি আলােকচিত্র শিল্পীর দ্বারা নির্বাচিত হওয়ায় ঘটনা বা ছবির সামগ্রিকতা প্রকাশ পায় না।

দ্বিতীয়ত, ছবির মাধ্যমে ইতিহাসের সঠিক চিত্র পাওয়া যায় না।

তৃতীয়ত, বর্তমানে কম্পিউটারে ফোটো-এডিটিং কৌশলের মাধ্যমে ফোটোগ্রাফে নানারকম বিকৃতি বা পরিবর্তন ঘটানাে সম্ভব।

৬২. ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলি কী ? অথবা, আধুনিক ইতিহাসচর্চায় ইনটারনেট ব্যবহারের দুটি সুবিধা লেখাে।
উত্তর :- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে বা আধুনিক ইতিহাসচর্চায় ইনটারনেট ব্যবহারের সুবিধাগুলি হল—

প্রথমত, ইনটারনেটের মাধ্যমে দেশবিদেশের বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, গবেষণাকেন্দ্রের জার্নাল, মহাফেজখানা মিউজিয়ামের সংগৃহীত নথিপত্র ও গবেষণা গ্রন্থ থেকে তথ্য পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, একই বিষয়ে অল্প সময়ে, অল্প খরচে, অল্প পরিশ্রমে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

তৃতীয়ত, অধ্যাপক বা গবেষণা নিদের্শকের সঙ্গে ভিডিয়াে কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষক তার উত্তর খুঁজে পান এবং তার পক্ষে দ্রুত গবেষণা বা পাঠপ্রস্তুতি করা সম্ভব হয়।

৬৩. ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহে ইনটারনেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি কী ?
উত্তর :- ইতিহাসের তথ্য সংগ্রহেইনটারনেট ব্যবহারের অসুবিধাগুলি হল - 

প্রথমত, ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না, কারণ সবসময় এই সমস্ত তথ্যের তথ্যসূত্র থাকে না।

দ্বিতীয়ত, কোনাে বিষয়ের আকরগ্রন্থ বা মূল নথিপত্র পাঠ করে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে যতটা নিশ্চিত হওয়া যায় ইনটারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ততটা নিশ্চিত হওয়া যায় না।

৬৪. সাময়িক ও সংবাদপত্রের ধারণার উল্লেখ করাে।
উত্তর :- যেসব পত্রপত্রিকা সময়ের নির্দিষ্ট ব্যবধানে (প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি ১৫ দিন অন্তর বা প্রতিমাসে প্রতি তিন মাস অন্তর) প্রকাশিত হয় যা সাময়িকপত্র নামে পরিচিত। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে জে. মার্শম্যানের সম্পাদনায় ‘ দিগদর্শন’ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাময়িকপত্রের সূচনা ঘটে।

          অন্যদিকে দৈনিক নানা খবরাখবর নিয়ে প্রকাশিত পত্রিকা সংবাদপত্র নামে পরিচিত, যেমন—গঙ্গাকিশাের ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় প্রকাশিত বাঙ্গাল গেজেট’ ছিল বাংলা ভাষায় বাঙালি পরিচালিত প্রথম সংবাদপত্র। 

৬৫. ‘সােমপ্রকাশ’ পত্রিকা কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হয়ে ওঠে ? অথবা, সােমপ্রকাশ পত্রিকা থেকে কী ধরনের ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় ? 
উত্তর :- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিকল্পনায় সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ কর্তৃক প্রবর্তিত ‘সােমপ্রকাশ’ পত্রিকা (১৮৫৮ খ্রি.) আধুনিক ভারতের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ—

প্রথমত, এই পত্রিকায় সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনীতি প্রভৃতি বিভিন্নধর্মী বিষয় প্রকাশিত হত।

দ্বিতীয়ত, কৃষকদের স্বার্থরক্ষা ও চেতনার প্রসারে, নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে, বিধবাবিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশে লিখিত প্রবন্ধগুলি থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপাদান পাওয়া যায়।

তৃতীয়ত, এই পত্রিকায় ব্রিটিশ সরকারের নীতিগুলির সমালােচনার মাধ্যমে স্বার্দেশিকতা প্রচার করা হত।

৬৬. ব্রিটিশ সরকার কেন ‘সােমপ্রকাশ' সংবাদপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয় ? 
উত্তর :- ব্রিটিশ সরকার ‘সােমপ্রকাশ’ সংবাদপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয়, কারণ—

প্রথমত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিকল্পনায় প্রকাশিত ‘সােমপ্রকাশ’ নামক সংবাদপত্র (যদিও প্রথমদিকে এটি ছিল সাময়িকপত্র) ছিল নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশক।

দ্বিতীয়ত, এই পত্রিকায় সেই সময়ের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারবিভাগ ও সামাজিক বিষয়ে নির্ভীক আলােচনা থাকত।

তৃতীয়ত, কাবুলে ব্রিটিশ সরকারের নীতিও সমালােচিত হয়েছিল এবং এ কারণেই দেশীয় সংবাদপত্র আইনের (১৮৭৮ খ্রি.) মাধ্যমে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় (১৮৭৯ খ্রি.)।

৬৭. ইতিহাসের উপাদানরূপে ‘সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী ? 
উত্তর :- ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্বগুলি হল—

প্রথমত, সংবাদপত্র কীভাবে জনমত গঠনে সাহায্য করে তা জানা যায়;

দ্বিতীয়ত, ব্রিটিশ সরকারের জনবিরােধী নীতির সমালােচনার বিভিন্ন দিক ফুটে ওঠে;

তৃতীয়ত, উনিশ শতক ও বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদের উদ্ভব, প্রচার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা জানা যায়;

চতুর্থত, উনিশ শতকে এদেশের সমাজ ও ধর্মের ক্ষেত্রে যে-সমস্ত কুসংস্কার ছিল তার বিরুদ্ধে সমাজ সংস্কারক ও ধর্ম সংস্কারকরা কীভাবে সােচ্চার হয়েছিলেন তা জানা যায়।

দৃষ্টান্ত হিসেবে বলা যায়, সতীদাহপ্রথার বিরােধিতায় ‘দিগদর্শন' নীলবিদ্রোহের সপক্ষে জনমত গঠনে হিন্দু প্যাট্রিয়ট’, ব্রিটিশ সরকারের জনবিরােধী নীতির সমালােচনার ক্ষেত্রে ‘সােমপ্রকাশ', বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় 'বয়কট' আন্দোলন প্রসারে 'সন্ধ্যা' পত্রিকার বিশেষ ভূমিকা ছিল।


************ সমাপ্ত ***************

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন