▪️সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর ▪️Class Seven 2nd Chapter Questions and Answers ▪️ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা : খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক ▪️
১. শশাঙ্কের নেতৃত্বে গৌড়ের উত্থান কীভাবে হয়েছিল বর্ণনা দাও।
উত্তর :- বঙ্গ ও গৌড় : গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের সুযোগে বাংলাদেশে দুটি স্বাধীন রাজ্যের উত্থান ঘটেছিল (ষষ্ঠ শতকে)। এই দুয়ের একটি ছিল বঙ্গ এবং অপরটি গৌড়। মোটামুটি পূর্ববঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ এবং পশ্চিমবঙ্গের এক ছোট অংশ নিয়ে 'বঙ্গ' রাজ্যটি গঠিত ছিল। আর পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ এবং উত্তরবঙ্গ নিয়ে গড়ে উঠেছিল 'গৌড়' রাজ্য।
বঙ্গ রাজ্যের রাজগণের মধ্যে গোপচন্দ্র, ধর্মাদিত্য ও সমাচারদেব - এর নাম সেই সময়কার তাম্রশাসনে উল্লেখ আছে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শীলভদ্রকে সমতট বা পূর্ববঙ্গের এক ব্রাহ্মণ রাজপরিবারের সন্তান বলে হিউয়েন সাঙ বলেছেন। শীলভদ্র গোপচন্দ্র, সমাচারদেব মুখ রাজগণের পরিবারসম্ভূত ছিলেন কিনা তা জানা যায়নি।
সম্ভবত ষষ্ঠ শতকের শেষ অবধি গৌড় গুপ্তবংশের শেষ রাজগণের অধীনে ছিল। মহাসেন গুপ্তের শাসনকালে শশাঙ্ক নামে জনৈক শক্তিশালী বাঙালি গৌড়ে এক স্বাধীন রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। রোটাসগড়ের দুর্গে একটি শিলালিপিতে শশাঙ্ককে 'সামন্তরাজ' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর থেকে মনে হয়, তিনি প্রথমে হয়তো মহাসেন গুপ্তের সামন্তরাজা ছিলেন, পরে স্বাধীনতা ঘোষণা করে গৌড় রাজ্যকে গুপ্ত অধিকার থেকে স্বতন্ত্র করে নিয়েছিলেন। রাজা শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের কাছে রাঙামাটি (রক্তমৃত্তিকা) নামক স্থানটি কর্ণসুবর্ণ বলে পরিচিত ছিল। এখানে সেই যুগের বহু ঐতিহাসিক চিহ্নও আবিষ্কৃত হয়েছে।
রাজা শশাঙ্ক মেদিনীপুর এবং ওড়িশার উত্তর ও দক্ষিণাংশ নিজ রাজ্যভুক্ত করে ছিলেন। দক্ষিণ - ওড়িশার শৈলোদ্ভব বংশের রাজগণের ওপরেই শশাঙ্ক সেই অঞ্চলের শাসনভার ন্যস্ত করেছিলেন। এই অঞ্চল, অর্থাৎ দক্ষিণ-ওড়িশা সেই সময়ে কঙ্গোদ নামে পরিচিত ছিল। শশাঙ্ক সমগ্র বাংলাদেশ গৌড় রাজ্যের অধিকারভুক্ত করে এক ঐক্যবদ্ধ বঙ্গরাজ্য গঠন করেছিলেন। এমনকি, তাঁর আমলে বাংলাদেশের সীমা মগধ ও বারাণসী পর্যন্ত বিস্তারলাভ করেছিল। তিনি মালব-রাজ দেবগুপ্তের সঙ্গে মিত্রতাবদ্ধ হয়ে থানেশ্বর ও কনৌজের রাজগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সম্রাট হর্ষবর্ধনের ভ্রাতা রাজ্যবর্ধনকে তিনি হত্যা করেছিলেন এবং হর্ষবর্ধনের আক্রমণ থেকে বাংলার নিরাপত্তা রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছিলেন।
বঙ্গাধিপতি শশাঙ্কই যে প্রাচীন বাংলার সর্বপ্রথম শক্তিশালী স্বাধীন রাজা, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি উত্তর ভারতে রাজ্য বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর পরিকল্পিত নীতি অনুসরণ করেই পরবর্তী কালের বাংলার পালরাজাগণ বাংলাদেশকে উত্তর ভারতের শ্রেষ্ঠ শক্তিতে পরিণত করেছিলেন।
২. প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন বংশের রাজনৈতিক অবদান আলোচনা করো।
উত্তর :- পালযুগে বাংলা একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাজ্যের মর্যাদা লাভ করে। পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় রাজনৈতিক অনৈক্য ও অনিশ্চয়তা দেখা দিলে বিজয়সেন তা দূর করে বাংলায় এক অখন্ড শক্তিশালী রাজ্য স্থাপন করেন।
বল্লালসেন (১১৫৮ - ১১৭৯ খ্রিঃ) : বিজয়সেনের পুত্র বল্লালসেনের নেতৃত্বে সেন বংশের শক্তি আরও দৃঢ়় হয়। তাঁর সময়কালে বাংলাদেশ জুড়ে সেন বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজ্য জয় অপেক্ষা অভ্যন্তরীণ উন্নতি সাধনের দিকেই বল্লাল সেনের বেশি আগ্রহ ছিল। ধর্ম ও সাহিত্যের প্রতি তাঁর অনুরাগ যথেষ্ট ছিল। তান্ত্রিক হিন্দুধর্মের প্রতি তিনি অনুরক্ত ছিলেন। বাংলার সমাজজীবনে ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থ শ্রেণিগুলির মধ্যে তিনি কৌলীন্য প্রথা চালুু করেছিলেন। সাহিত্যিক হিসেবে বল্লালসেন খ্যাতি লাভ করেন। দানসাগর ও অদ্ভুতসাগর নামে দুটি গ্রন্থ তিনি রচনা করেন।
লক্ষ্মণসেন (১১৭৯ - ১২০৪ খ্রিঃ) : বল্লালসেনের পুত্র লক্ষ্মণসেন বাংলার শেষ স্বাধীন হিন্দু নরপতি। রাজত্বের প্রথম দিকে তিনি যথেষ্ট সামরিক কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। শিলালিপি থেকে জানা যায় গৌড়, কামরূপ, কলিঙ্গ ও কাশীর রাজারা তাঁর প্রভুত্ব স্বীকার করেন। এছাড়া তিনি এলাহাবাদ ও বারাণসী পর্যন্ত সমর অভিযান চালিয়েছিলেন। তবে রাজত্বের শেষ ভাগে তাঁর সামরিক শক্তি ক্ষীণ হয়ে পড়ে। ত্রয়োদশ শতকের প্রারম্ভে অর্থাৎ ১২০৪ - ০৫ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবকের সেনাপতি ইখ্তিয়ারউদ্দিন মোহাম্মদ বখ্তিয়ার খলজি অতর্কিতে লক্ষ্মনসেনের রাজধানী নদিয়া আক্রমণ করেন। কিন্তু তিনি এই আক্রমণের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ করার সুযোগ পানন। বাধ্য হয়ে তিনি পূর্ববঙ্গে পালিয়ে যান। সেখানেই ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু ঘটে।
সেন বংশের পতন : লক্ষ্মনসেনের পর সেন বংশ পূর্ব ও দক্ষিণ বঙ্গে আরও পঞ্চাশ বছর ক্ষমতাসীন ছিল। কিন্তু দুর্বল বংশধরেরা আত্মকলহে যুক্ত থাকায় সেন রাজ্য ভাঙনের সম্মুখীন হয়। বিভিন্ন এলাকায় একাধিক স্বাধীন রাজ্য গড়ে ওঠেে। এই সুযোগে ত্রয়োদশ শতকে সমগ্র বাংলায় মুসলমান আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩. হজরতের মদিনা-গমন ও তাঁর চরিত্র সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তর :- হজরত মোহম্মদ প্রচার করেন যে জীব সেবাই আল্লাহর সেবা। দীন দরিদ্র মানুষের সেবা করলে আর বিশেষ করে আল্লাহর উপাসনার প্রয়োজন হয়না। ধনী দরিদ্র সকলেই আল্লাহর কাছে সমান। পৌত্তলিকতা এবং আল্লাহর অস্তিত্ব ঘোষণায় মোহম্মদ পুরোহিত শ্রেণির তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হলেন। তাঁর ওপর চলতে লাগল অকথ্য অত্যাচার। অবস্থার গুরুত্ব উপলব্ধি করে মোহম্মদ কয়েকজন শিষ্যকে নিয়ে ৬২২ খ্রিঃ মদিনায় চলে গেলেন। মোহম্মদের মক্কা ত্যাগকে মুসলমানেরা একটি পবিত্র দিন বলে মনে করেন। এই ৬২২ খ্রিঃ থেকেই মুসলমানদের মধ্যে হিজরি সন শুরু হয়।
মোহম্মদের বাণীতে মদিনাবাসীরা আকৃষ্ট হয়ে দলে দলে ইসলাম ধর্মে নাম লেখায় এবং মোহম্মদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। কাবা শরীফের কৃষ্ণ পাথরটি ছাড়া আর সমস্ত দেবদেবীর মূর্তী ভেঙে ফেলা হয়। এরপর থেকে আরবদেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসলাম ধর্মের দ্রুত প্রসার ঘটে। ৬৩২ খ্রিঃ ৬০ বছর বয়সে মোহম্মদ মদিনায় দেহত্যাগ করেন।
হজরতের চরিত্র : অত্যন্ত সরল ও অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন মোহম্মদ। তিনি পর্ণকুটিরে বসবাস করতেন। তিনি প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী এবং পৌত্তলিকতার বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও পৌত্তলিকদের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করতেন নাা। পরাজিত শত্রুর সঙ্গে তিনি সব সময় ভালো ব্যবহার করতেন। কোনো ব্যক্তিকে ইসলাম ধর্মগ্রহণের জন্য বাধ্য করতেন না। শিক্ষার ওপরেও তিনি গুরুত্ব আরোপ করতেন।
৪. চিনদেশের পর্যটক হিউয়েন সাঙের সম্পর্কে যা জানো সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর :- হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে ভারতের সঙ্গে চিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। সেই সম্পর্কের সুযোগে বিখ্যাত বৌদ্ধ পন্ডিত ও পর্যটক হিউয়েন সাঙ ভারত ভ্রমনে আসেন। তিনি বহু বাধা পেরিয়ে মধ্য এশিয়ার পথ ধরে ৬৩০ খ্রিঃ কাশ্মীরে পৌঁছন। এরপর প্রায় চোদ্দ বছর ধরে (৬৩০-৬৪৪ খ্রিঃ) ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমন করেন। আর কোনো বিদেশি পর্যটক তাঁর মত সমগ্র ভারত পরিভ্রমন করেননি। হর্ষবর্ধনের রাজসভাতেও তিনি দীর্ঘদিন অবস্থান করেছিলেন। ৬৪৫ খ্রিঃ হিউয়েন সাঙ বহু বৌদ্ধ মূর্তী ও ৬৫৭ টি বৌদ্ধ পান্ডুলিপি সংগ্রহ করেন। এরপর স্বদেশে ফিরে তিনি প্রায় ৭৬ খানি গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল শি-য়ু-কি। এই গ্রন্থে ভারত ভ্রমন সংক্রান্ত বিশদ বিবরণ আছে।
হিউয়েন সাঙ বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত ছিলেন। তাই ভারতে এসে নিষ্ঠা ভাবে বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্রগুলি অধ্যয়ন করেন এবং বহু বৌদ্ধ তীর্থ দর্শন করেন। তিনি প্রায় পাঁচ বছর নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। তাঁর মতে, সেইসময় প্রাচ্য জগতে নালন্দা ছিল বৃহত্তম শিক্ষাকেন্দ্র। এখানে দশ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করত। হিউয়েন সাঙ হর্ষবর্ধনের শাসন প্রণালীর অকুণ্ঠু প্রশংসা করেছেন। তাঁর নতুন রাজধানী কনৌজ ছিল জনবহুল ও সমৃদ্ধ। তাঁর রাজ্য ছিল সুশাসিত। বারাণসী নগর দেখে তিনি খুবই প্রীত হয়েছিলেন। হিউয়েন সাঙ হর্ষবর্ধনের রাজ্য-কর্তব্যবোধ ও দানশীলতার প্রশংসা করেছেন। ভূমি রাজস্ব ও অন্যান্য করের পরিমাণ সামান্য ছিল। হিউয়েন সাঙ দক্ষিণ ভারতে দ্বিতীয় পুলকেশীর রাজ্যে কিছুদিন অবস্থান করেন। হিউয়েন সাঙ উত্তর ভারতে হর্ষবর্ধন ও দক্ষিণ ভারতে পুলকেশীকে শ্রেষ্ঠ রাজা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। চালুক্য রাজ্যের সমৃদ্ধি ও শক্তির কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। হিউয়েন সাঙ তক্ষশিলায় দুইবার গিয়েছিলেন। তক্ষশিলা ছিল ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষাকেন্দ্র। হিউয়েন সাঙ তৎকালীন ভারতবাসীর সাধুতা ও সরলতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাঁর মতে, ভারতীয়দের জীবনযাত্রা ছিল অনাড়ম্বর। তবে হিন্দু সমাজে বর্ণ-ভেদ প্রথা প্রচলিত ছিল।
৫. দেবপালের নেতৃত্বে পাল সাম্রাজ্যের অগ্রগতি উল্লেখ করো।
উত্তর :- ধর্মপালের পুত্র দেবপাল (৮১০-৮৫০ খ্রিঃ) ছিলেন পাল বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা। পিতার মতো তিনিও ছিলেন সাম্রাজ্যবাদী। তাঁর সাম্রাজ্য দক্ষিণে বিন্ধ্যপর্বত ও পশ্চিমে কাশ্মীরের সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। দেবপাল ওড়িশা ও কামরূপের দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলার এই দুই সীমান্ত রাজ্য জয় করেন। দেবপালের মন্ত্রী কেদার মিশ্রের পুত্র গুরব মিশ্রের লিপি অনুসারে জানা যায়, দেবপাল হিমালয়ের কাছে অবস্থিত হুন রাজ্যটি জয় করে কম্বোজ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। এভাবে প্রায় সমগ্র উত্তর-ভারতে তাঁর আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেবপালের আমলে পাল সাম্রাজ্য গৌরবের চরম শিখরে উঠেছিল। দেবপালের মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে চন্দেল ও কলচুরিদের ক্রমাগত আক্রমণে পাল সাম্রাজ্যের সংহতি বিপন্ন হয়ে ওঠে। পাল সাম্রাজ্যের এই ঘোর দুর্দিনে প্রথম মহীপাল (৯৮৭-১০৩৮ খ্রিঃ) বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি উত্তর ও পূর্ববঙ্গ পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু অল্পকাল মধ্যে প্রথম মহীপালকে দাক্ষিণাত্যের পরাক্রান্ত চোলরাজ রাজেন্দ্র চোলের আক্রমণের সম্মুখীন হতে হয়। চোলরা ফিরে গেলে প্রথম মহীপাল একাধিক যুদ্ধে জয়লাভ করে মিথিলা (উত্তর বিহার) ও বারাণসী আবার দখল করে নেন। মহীপাল যে শুধু সুদক্ষ যোদ্ধাই ছিলেন তাই আসলে নয়, তিনি শিক্ষা ও সংস্কৃতিরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। মহীপালের বাংলায় সকল দিকেই এক নতুন জাতীয় জাগরণের আভাস পাওয়া যায়।
পাল বংশের শেষ শক্তিশালী রাজা ছিলেন রামপাল (১০৭৭- ১১৩০ খ্রিঃ)। সি়ংহাসনে বসেই রামপাল পালবংশের গৌরব পুনরুদ্ধার করেন। প্রথম মহীপালের আমলে দিব্বোক বা দিব্য নামে এক কৈবর্ত নেতার নেতৃত্বে কৈবর্ত বিদ্রোহ হয়েছিল। মহীপাল বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধে পরাস্ত ও নিহত হয়েছিলেন। কৈবর্তরা উত্তরবঙ্গে বা বরেন্দ্রভূমিতে একটি স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন। দিব্য এই রাজ্যের রাজা হন। দিব্যের পর যথাক্রমে রুদ্রক ও ভীম উত্তরবঙ্গে রাজত্ব করতে থাকেন। সি়ংহাসনে আরোহণ করেই রামপাল বিদ্রোহী কৈবর্ত দিব্যের হাত থেকে বরেন্দ্রভুমি পুনরুদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেন। এরপর রামপাল সসৈন্যে বরেন্দ্রভূমি আক্রমণ করেন। সেইসময় কৈবর্ত রাজা ছিলেন দিব্বেক বা দিব্যের ভ্রাতুষ্পুত্র ভীম। ভীমের সঙ্গেই রামপালের প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। ভীম পরাস্ত ও নিহত হন। রামপাল বরেন্দ্রভূমি পুনরুদ্ধার করেন। সন্ধ্যাকর নন্দীর 'রামচরিত' গ্রন্থে এই যুদ্ধের বিবরণ আছে।
▪️File Name :- সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায়
▪️Language :- Bengali