Type Here to Get Search Results !

নবম শ্রেণি জীবন বিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

 

জীবন বিজ্ঞান         দ্বিতীয় অধ্যায়        জীবন সংগঠনের স্তর

প্রশ্নঃ প্রোটোপ্লাজম কী কী নিয়ে গঠিত ?

উত্তরঃ কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার, ফসফরাস ইত্যাদি মৌলের সংযোগে গঠিত হয় প্রোটোপ্লাজম।

প্রশ্নঃ জীবদেহে কত শতাংশ জল থাকে ?

উত্তরঃ জীবদেহের ওজনের ৬০-৮০ শতাংশ।

প্রশ্নঃ উদ্ভিদেরা কী দিয়ে জল শোষণ করে ?

উত্তরঃ স্থলজ উদ্ভিদেরা প্রধানত মৃত্তিকাস্থিত মূলরোম দিয়ে এবং জলজ উদ্ভিদেরা জলে নিমজ্জিত সমস্ত অঙ্গ দিয়ে জল শোষণ করে।

প্রশ্নঃ মানুষের কত পরিমাণ জলের প্রয়োজন হয় ?

উত্তরঃ সাধারণত দৈনিক ৩০০০ml জলের প্রয়োজন হয়।

è দৈনিক মূত্রের সঙ্গে ১৫০০ml, ঘামের সঙ্গে ৮০০-১০০০ml, নিশ্বাসের সঙ্গে ৩০০ml, মলের সঙ্গে ২০০ml জল নির্গত হয়।

প্রশ্নঃ জীবদেহে জলের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে জলের ভূমিকাঃ (ক) জল উদ্ভিদ ও প্রাণীকোশের প্রোটোপ্লাজমের সজীবতা বজায় রাখে। (খ) উদ্ভিদ পাতাইয় উৎপন্ন খাদ্য জলের সাহায্যে কোশ থেকে কোশান্তরে প্রেরণ করে। (গ) জল উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। (ঘ) বীজের অঙ্কুরোদগম জলের সহায়তায় ঘটে। (ঙ) খনিজ লবণ, হরমোন এবং বিভিন্ন অজৈব ও জৈব পদার্থ জলীয় মাধ্যমে সমগ্র জীবদেহে পরিবাহিত হয়। (চ) প্রাণীদেহে খাদ্যবস্তু আর্দ্র বিশ্লেষণের মাধ্যমে পাচিত হয়ে পুষ্টিতে সহায়তা করে।

প্রশ্নঃ অ্যাসিড কাকে বলে ? অ্যাসিড কত প্রকার ও কী কী ? অ্যাসিডের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ অ্যাসিডঃ এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু সমন্বিত যৌগ যা জলীয় দ্রবণে বিয়োজিত হয়ে ধনাত্মক (+) আধান রূপে কেবলমাত্র হাইড্রোজেন আয়ন (H+ ) উৎপন্ন করে এবং যার হাইড্রোজেন পরমাণু সম্পূর্ণ আব আংশিকভাবে ধাতু বা ধাতুর মতো আচরণকারী যৌগ মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে বিক্রিয়াজাত পদার্থরূপে লবণ প্রস্তুত করে, তাদের অ্যাসিড বলে।

è প্রকারভেদঃ অ্যাসিড দুই প্রকার – (ক) খনিজ অ্যাসিড (খ) জৈব অ্যাসিড।

(ক) যেসকল অ্যাসিড খনিজ পদার্থ থেকে উৎপন্ন হয়, তাদের খনিজ অ্যাসিড বলে। যেমন – নাইট্রিক অ্যাসিড।

(খ) যেসকল অ্যাসিড জৈব পদার্থ থেকে উৎপন্ন হয়, তাদের জৈব অ্যাসিড বলে। যেমন – ম্যালিক অ্যাসিড।

è অ্যাসিডের বৈশিষ্ট্যঃ (ক) অ্যাসিড ভিনিগারের মতো অম্লস্বাদ যুক্ত। (খ) নীল রঙের লিটমাসকে লাল রঙে পরিণত করে। (গ) অ্যাসিড ক্ষারকের সঙ্গে বিক্রিয়া করে লবণ ও জল উৎপন্ন করে।

প্রশ্নঃ জীবদেহে অ্যাসিডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে অ্যাসিডের ভূমিকাঃ অ্যাসিড জীবদেহে রক্তমধ্যস্থ pH –র ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া বিভিন্ন জৈবরাসায়নিক ক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। দেহে ক্ষারের মাত্রা বেড়ে গেলে অ্যাসিড বেশিমাত্রায় নিঃসৃত হয়ে ক্ষারকে প্রশমিত করে। অ্যাসিড খাদ্যগ্রহণের পর খাদ্যকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকায় ভেঙে হজমে সাহায্য করে। এ ছাড়া ক্লান্তির পর পেশিকে অক্সিজেনের জোগান দিতে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্নঃ ক্ষার কাকে বলে ? ক্ষারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ ক্ষারঃ জলে দ্রবীভূত যাবতীয় ধাতব মূলকের অক্সাইড ও হাইড্রক্সাইডকে ক্ষার বলে ।

è ক্ষারের বৈশিষ্ট্যঃ (ক) ক্ষারীয় দ্রবণ পিচ্ছিল হয়। (খ) এটি তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম। (গ) লাল রঙের লিটমাসকে নীল রঙে পরিণত করে। (ঘ) সর্বদাই বিয়োজিত হয়ে হাইড্রক্সিল আয়ন গঠন করে।

প্রশ্নঃ ক্ষার কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই প্রকার- (ক) মৃদু ক্ষার (খ) তীব্র ক্ষার।

è (ক) যেসকল ক্ষার অল্পমাত্রায় আয়নিত হয় তাদের মৃদু ক্ষার বলে। যেমন – NH4OH

è (খ) যেসকল ক্ষার অধিকমাত্রায় আয়নিত হয়, তাদের তীব্র ক্ষার বলে। যেমন – NaOH

প্রশ্নঃ জীবদেহে ক্ষারের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে ক্ষারের ভূমিকাঃ দেহে অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ক্ষার তাকে প্রশমিত করে। এ ছাড়া ক্ষার দেহের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। মানবদেহে রক্ত একটি প্রাকৃতিক বাফার এবং এই বাফারকে নিয়ন্ত্রিত রাখার জন্য ক্ষারের প্রয়োজন। এছাড়া বিভিন্ন উৎসেচক, যেমন – ট্রিপসিন, ক্ষারীয় মাধ্যমে ভালো কাজ করে।

প্রশ্নঃ লবণ কাকে বলে ? লবণ কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ লবণঃ কোনো অ্যাসিডের প্রতিস্থাপনযোগ্য হাইড্রোজেন পরমাণু, কোনো ধাতু বা ধাতুধর্মী মূলক দ্বারা সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রতিস্থাপিত হলে যে যৌগ উৎপন্ন হয়, তাকে লবণ বলে।

è প্রকারভেদঃ লবণ ৩ প্রকার – (ক) শমিত বা প্রশম লবণ (খ) আম্লিক বা বাই লবণ (গ) ক্ষারীয় লবণ।

প্রশ্নঃ জীবদেহে লবণের ভূমিকা লেখ।

উত্তরঃ জীবদেহে লবণের ভূমিকাঃ লবণ আমাদের দেহে বিভিন্ন তরলের বিশেষ করে রক্তের সাম্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই কারণে দেহ থেকে অতিরিক্ত তরল বেরিয়ে গেলে আমাদের লবণ জল (ORS) পান করতে হয়। দেহে অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে লবণ তাকে প্রশমিত করে। বিভিন্ন প্রকারে পেশি সঞ্চালন এবং হৃদ্‌স্পন্দন নিয়ন্ত্রণের জন্য লবণের প্রয়োজন।

প্রশ্নঃ কোষে গ্যাসের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ কোশে গ্যাসের ভূমিকাঃ কোশের প্রোটোপ্লাজমে নাইট্রোজেন একটি বিশেষ উপাদান। শ্বসন ক্রিয়ার জন্য O2 গ্যাস কোশে প্রবেশ করে এবং জারণ ক্রিয়ায় অংশ নেয়। অপরপক্ষে জারন ক্রিয়ায় উৎপন্ন CO2 কোশ থেকে মুক্ত হয়। অপরপক্ষে উদ্ভিদের সবুজ কোশে CO2 খাদ্য সংশ্লেষে অংশ নেয়।

প্রশ্নঃ জৈব অণুদের কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই ভাগে – (ক) ক্ষুদ্র অণুসমূহ (অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড), (খ) বৃহৎ অণুসমূহ (প্রোটিন, লিপিড, নিউক্লিক অ্যাসিড)।

প্রশ্নঃ অ্যামাইনো অ্যাসিড কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রোটিনের গঠনগত একককে অ্যামাইনো অ্যাসিড বলে।

প্রশ্নঃ মানবদেহে অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডের সংখ্যা কয়টি ?

উত্তরঃ ৮ টি।

প্রশ্নঃ অ্যামাইনো অ্যাসিডের মূল সংকেত কী ?

উত্তরঃ R – CH.NH2COOH

প্রশ্নঃ জীবদেহে অ্যামাইনো অ্যাসিডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে অ্যামাইনো অ্যাসিডের ভূমিকাঃ (ক) অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রোটিন ও উৎসেচকের প্রাথমিক উপাদান। (খ) কতিপয় অ্যামাইনো অ্যাসিড থেকে হরমোন উৎপন্ন হয়। (গ) টাইরোসিন অ্যামাইনো অ্যাসিড ত্বকের মেলানিন রঞ্জক তৈরি করে। (ঘ) ট্রিপটোফ্যান অ্যামাইনো অ্যাসিড থেকে ভিটামিন নিকোটিনামাইড ও উদ্ভিদ হরমোন ইন্ডোল অ্যাসিটিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ ফ্যাটি অ্যাসিড কাকে বলে ? ফ্যাটি অ্যাসিড কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ ফ্যাটি অ্যাসিডঃ ফ্যাটি অ্যাসিড একধরণের সরল হাইড্রোকার্বন শৃঙ্খল যুক্ত জৈব অম্ল যা ফ্যাটের আর্দ্রবিশ্লেষণ থেকে পাওয়া যায়।

প্রকারভেদঃ ফ্যাটি অ্যাসিড দুই প্রকার – (ক) সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড (খ) অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড।

প্রশ্নঃ জীবদেহে ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকাঃ (ক) কোশপর্দা গঠন করে। (খ) প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন গঠনে অংশ নেয়। (গ) দেহে শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্নঃ নিউক্লিওটাইড কাকে বলে ?

উত্তরঃ নিউক্লিক অ্যাসিডের গঠনগত ও কার্যগত একক হল নিউক্লিওটাইড যা পেন্টোজ শর্করা, নাইট্রোজেন বেস এবং ফসফেট সহযোগে গঠিত।

প্রশ্নঃ ৫ কার্বন যুক্ত শর্করা কোন্‌টি ?

উত্তরঃ পেন্টোজ শর্করা।

প্রশ্নঃ পিউরিন কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ পিউরিন ২ প্রকার – (ক) অ্যাডেনিন (খ) গুয়ানিন।

প্রশ্নঃ নিউক্লিক অ্যাসিড কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ ২ প্রকার – (ক) DNA (খ) RNA

প্রশ্নঃ DNA ও RNA –এর পুরো নাম কী ?

উত্তরঃ DNA – ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড। RNA – রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড।

প্রশ্নঃ জিন কী ?

উত্তরঃ জিন হল DNA –এর এমন একটি অংশ যাতে অনেকগুলি নিউক্লিওটাইড রৈখিক সজ্জায় শৃঙ্খলিত থেকে একটি পলিপেপটাইড তৈরি করতে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ DNA –কে জিন বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ DNA প্রধানত জীবদেহের বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলি বংশ পরম্পরায় বহন করে বলে DNA কে জিন বলে।

প্রশ্নঃ কার্বোহাইড্রেটে সাধারণত কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন কী অনুপাতে থাকে ?

উত্তরঃ 1 : 2 : 1

প্রশ্নঃ জীবদেহে শর্করার ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে শর্করার ভূমিকাঃ (ক) দেহগঠনঃ দৈনিক খাদ্যে প্রায় ৭০-৮০% শর্করা থাকে যা দেহগঠনে অংশগ্রহণ করে। (খ) শক্তি সরবরাহঃ শর্করা দেহে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাপশক্তি উৎপাদন করে। এক গ্রাম শর্করার জারণে 4.1 kcl তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। (গ) সঞ্চয়ঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা যকৃৎ ও পেশিতে গ্লাইকোজেন রূপে সঞ্চিত থাকে, যা ভবিষ্যতে ব্যবহৃত হয়। (ঘ) দ্বিশর্করা খাদ্য উপাদানরূপে ব্যবহৃত হয়। যেমন – মলটোজ। (ঙ) প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্যঃ জীবদেহের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী শর্করা জাতীয় খাদ্য থেকে অ্যামাইনো অ্যাসিড সংশ্লেষিত হয় ও প্রোটিন উৎপাদন ঘটে। এইভাবে শর্করা জাতীয় খাদ্যগুলি প্রোটিনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে বলে এদেরকে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলে।

প্রশ্নঃ কোশীয় গঠনে কী সবচেয়ে বেশি পরিমাণে থাকে ?

উত্তরঃ প্রোটিন।

প্রশ্নঃ কোন্‌ শব্দ থেকে প্রোটিন শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে ?

উত্তরঃ গ্রিক শব্দ প্রোটিওস থেকে।

প্রশ্নঃ কে কবে প্রোটিন নামকরণ করেন ?

উত্তরঃ ডাচ রসায়নবিদ মাল্ডার ১৮৩৮ প্রোটিনের নামকরণ করেন।

প্রশ্নঃ জীবদেহে প্রোটিনের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে প্রোটিনের ভূমিকাঃ (ক) দেহগঠনঃ জীবদেহ গঠনের জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। কোশের গঠনবস্তুর বেশিরভাগটাই প্রোটিন। দেহের বেশি, অস্থি, তরুণাস্থি প্রভৃতি প্রোটিন দিয়ে তৈরি। (খ) দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিঃ দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন অত্যাবশ্যক উপাদান। (গ) হিমোগ্লোবিন গঠনঃ মানব রক্তের লোহিতকণিকা মধ্যস্থ হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। (ঘ) অ্যান্টিবডি উৎপাদনঃ অ্যান্টিবডি উৎপাদনে প্রোটিনের একান্ত প্রয়োজন। এর অভাবে শরীর রোগাক্রান্ত হয়। (ঙ) প্রোটিনের ক্যালোরিমূল্যঃ 4.1 kcal/gm ।

প্রশ্নঃ জীবদেহে লিপিডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে লিপিডের ভূমিকাঃ (ক) শক্তির উৎসঃ প্রাণীদেহে তাপশক্তি উৎপাদনে বিরাট ভূমিকা পালন করে। এক গ্রাম ফ্যাট থেকে প্রায় 9.3 kcal শক্তি পাওয়া যায়। (খ) খাদ্যভান্ডারঃ প্রাণীদেহে চর্বি বা মেদরূপে সঞ্চিত থেকে খাদ্যভান্ডার গড়ে তোলে। (গ) তাপ নিয়ন্ত্রণঃ ত্বকের নীচে সঞ্চিত ফ্যাট দেহের তাপ সংরক্ষণে সহায়তা করে। (ঘ) দ্রাবক হিসাবে কার্যঃ ভিটামিন A, D, E, K ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়। (ঙ) হরমোন উৎপাদনঃ কোলেস্টরল থেকে ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরন ইত্যাদি হরমোন ও ভিটামিন D উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ নিউক্লিক অ্যাসিড কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রতিটি সজীব কোশের নিউক্লিয়াসে অম্লধর্মী যে পদার্থ জীবের নানান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায় এবং অপত্য জনুতে এইসকল বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার ঘটায়, তাদের নিউক্লিক অ্যাসিড বলে।

è DNA ও RNA নিউক্লিক অ্যাসিড নামে পরিচিত।

è DNA প্রাণী এবং উদ্ভিদ কোশের ক্রোমাটিন তন্তুর মধ্যে এবং RNA নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমে থাকে।

প্রশ্নঃ নিউক্লিক অ্যাসিডের একক কী ?

উত্তরঃ নিউক্লিওটাইড।

প্রশ্নঃ জীবদেহে নিউক্লিক অ্যাসিডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ জীবদেহে নিউক্লিক অ্যাসিডের ভূমিকাঃ (ক) DNA প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোশের সমস্ত জৈবিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। DNA জীবের বংশগত বৈশিষ্ট্য পরিবহণ করে। (খ) RNA কোশের প্রোটিন সংশ্লেষণে সহায়তা করে। RNA রাইবোজোম গঠনে অংশ নেয়।

প্রশ্নঃ ATP –এর পুরো নাম কী ?

উত্তরঃ অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট।

প্রশ্নঃ ATP কীভাবে উৎপন্ন হয় ?

উত্তরঃ মুখ্যত শ্বসন ক্রিয়ায় ATP উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ ATP –কে এনার্জি কারেন্সি বলে কেন ?

উত্তরঃ ATP থেকে নির্গত শক্তি জীবদেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়। জীবদেহে একমাত্র ATP অণুর মধ্যেই শক্তি সঞ্চিত থাকতে পারে। এই কারণে ATP –কে এনার্জি কারেন্সি বলে।

প্রশ্নঃ ADP –এর পুরো নাম কী ?

উত্তরঃ অ্যাডিনোসিন ডাইফসফেট।

প্রশ্নঃ ভিটামিন কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে বিশেষ খাদ্যোপাদান স্বাভাবিক খাদ্যে অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং যার অভাবে দেহে বিভিন্ন রোগলক্ষণ প্রকাশ পায়, তাকে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ বলে।

প্রশ্নঃ ভিটামিনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ ভিটামিনের বৈশিষ্ট্যঃ (ক) ভিটামিন একপ্রকারের জৈব অনুঘটক, যা বিপাক ক্রিয়ায় কো-এনজাইমরূপে কাজ করে। (খ) ভিটামিন সাধারণ খাদ্যে খুব কম পরিমাণে থাকে। (গ) ভিটামিন অন্যান্য খাদ্যোপাদানের তুলনায় জীবদেহে খুব কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়। (ঘ) ভিটামিন পরিপাক ক্রিয়ায় নষ্ট হয় না। (ঙ) দ্রাব্যতা অনুসারে ভিটামিন দু-প্রকারের, যথা – জলে দ্রাব্য এবং স্নেহপদার্থে দ্রাব্য।

প্রশ্নঃ ভিটামিন কত প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই প্রকার – (ক) জলে দ্রাব্য (B-complex, C) (খ) স্নেহপদার্থে দ্রাব্য (A, D, E, K)।

প্রশ্নঃ ভিটামিন A –এর অভাবে কী কী রোগ হয় ?

উত্তরঃ রাতকানা, অন্ধত্ব এবং ফ্রিনোডার্ম।

প্রশ্নঃ ভিটামিন D –এর অভাবে কী কী রোগ হয় ?

উত্তরঃ ছোটদের রিকেট এবং বড়োদের অস্টিওম্যালেশিয়া।

প্রশ্নঃ কোন্‌ ভিটামিন বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ করে এবং মাতৃস্তনে দুগ্ধ ক্ষরণ বৃদ্ধি করে ?

উত্তরঃ ভিটামিন E

প্রশ্নঃ ভিটামিন B –কমপ্লেক্স –এর অভাবে কী রোগ হয় ?

উত্তরঃ বেরিবেরি, স্টোমাটাইটিস, রক্তাল্পতা, পেলেগ্রা ।

প্রশ্নঃ ভিটামিন C –এর অভাবে কী কী রোগ হয় ?

উত্তরঃ স্কার্ভি ও রক্তাল্পতা।

প্রশ্নঃ ভিটামিন C –এর রাসায়নিক নাম কী ?

উত্তরঃ অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ।

প্রশ্নঃ খনিজ মৌলগুলিকে ক-টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই ভাগে – (ক) অতিমাত্রিক মৌল বা মেজর এলিমেন্ট (সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম ইত্যাদি)। (খ) স্বল্পমাত্রিক মৌল বা মাইনর এলিমেন্ট (লোহা, তামা, দস্তা, বোরন ইত্যাদি)।

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌলের অভাবে স্নায়ু ও পেশির কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় ?

উত্তরঃ পটাশিয়াম (K)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌলের অভাবে রিকেট ও অস্টিওম্যালেশিয়া রোগ হয় ?

উত্তরঃ ক্যালশিয়াম (Ca) এবং ফসফরাস (P)

প্রশ্নঃ কোন্‌ মৌলের অভাবে শারীরিক বিকলতা দেখা যায় ?

উত্তরঃ ম্যাগনেশিয়াম (Mg)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌলের অভাবে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হয় ?

উত্তরঃ লৌহ (Fe)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌল নখ, চুল ও তরুণাস্থি গঠন করে ?

উত্তরঃ সালফার (S)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌলের অভাবে গলগন্ড রোগ হয় ?

উত্তরঃ আয়োডিন (I)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌলের অভাবে দন্তক্ষয় হয় ?

উত্তরঃ ফ্লুওরিন (F)

প্রশ্নঃ কোন্‌ খনিজ মৌল দাঁতের এনামেল গঠনে অংশ নেয় ?

উত্তরঃ ফ্লুওরিন (F)

প্রশ্নঃ একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ মানুষের দেহে কতটি কোশ থাকে ?

উত্তরঃ প্রায় ৬ লক্ষ কোটি থেকে ১০ লক্ষ কোটি (৬০×১০১৫) কোশ থাকে।

প্রশ্নঃ কে কবে প্রথম কোশ আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ রবার্ট হুক ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে। à সেটি ছিল মৃত কোশ।

প্রশ্নঃ কে কবে প্রথম জীবিত কোশ আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ লিউয়েনহক ১৬৭৪ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্নঃ কোশ কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রভেদক ভেদ্য আবরণী বেষ্টিত প্রোটোপ্লাজমে দিয়ে গঠিত স্ব-প্রজননশীল জীবদেহের গঠনমূলক ও জৈবিক ক্রিয়ামূলক একককে কোশ বলে।

প্রশ্নঃ কোশপ্রাচীর কাকে বলে ? কোশপ্রাচীর ক-টি স্তর নিয়ে গঠিত ও কী কী ?

উত্তরঃ উদ্ভিদকোশের কোশপর্দার বাইরে সেলুলোজ নির্মিত জড় পদার্থের যে একটি পুরু, দৃঢ়, ভেদ্য ও স্থিতিস্থাপক আবরণ থাকে, তাকে কোশপ্রাচীর বা কোশপ্রকার বলে।

è কোশপ্রাচীর ৩ টি স্তর দিয়ে গঠিত – (ক) মধ্যপর্দা (খ) মুখ্য বা প্রাথমিক প্রাচীর (গ) গৌণ প্রাচীর।

(ক) মধ্যপর্দাঃ উদ্ভিদকলার সন্নিহিত দুটি কোশের মাঝে যে আন্তঃকোশীয় ধাত্র থাকে, তাকে মধ্যপর্দা বলে।

(খ) মুখ্য প্রাচীরঃ মধ্যপর্দার দু-পাশে প্রথম যে প্রাচীর গঠিত হয়, তাকে মুখ্য প্রাচীর বলে। à এটি কোশের বাইরের স্তর।

(গ) গৌণ প্রাচীরঃ প্রাথমিক কোশপ্রাচীরের ভিতরের দিকে এবং প্লাজমা পর্দার বাইরে যে প্রাচীর গঠিত হয়, তাকে গৌণ প্রাচীর বলে।

প্রশ্নঃ কোশপ্রাচীরের কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) কোশের প্রোটোপ্লাজম এবং প্লাজমাপর্দাকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে। (খ) কোশপ্রাচীর কোশকে যান্ত্রিক শক্তি প্রদান করে। (গ) ভেদ্য কোশপ্রাচীর পাশাপাশি দুটি কোশের মধ্যে জল ও খনিজ পদার্থ আদানপ্রদানে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ কোশপর্দা কাকে বলে ? কোশপর্দা ক-টি স্তর নিয়ে গঠিত ?

উত্তরঃ প্রতিটি সজীব কোশের প্রোটোপ্লাজম বাইরের দিক থেকে যে অতি সূক্ষ্ম স্থিতিস্থাপক, প্রভেদক ভেদ্য, লাইপোপ্রোটিন নির্মিত ত্রিস্তরীয় সজীব আবরণ দিয়ে ঢাকা থাকে, তাকে কোশপর্দা বলে।

è কোশপর্দা তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত।

è কোশপর্দায় ৪০ ভাগ লিপিড এবং ৫০ ভাগ প্রোটিন এবং ১০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট থাকে।

প্রশ্নঃ কে ‘তরল মোজাইক মডেল’ উপস্থাপন করেন ?

উত্তরঃ বিজ্ঞানী সিঙ্গার ও নিকলসন।

প্রশ্নঃ কোশপর্দার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) কোশমধ্যস্থ সজীব অংশকে রক্ষা করে (খ) কোশপর্দা বা প্লাজমাপর্দার একটি প্রধান কাজ হল সজীব কোশের বহিঃ ও অন্তঃমাধ্যমের একটি অভিস্রাবণীয় প্রতিবন্ধকরূপে কাজ করা (গ) কয়েক প্রকার কোশ-অঙ্গাণু এবং নিউক্লিয় পর্দা সৃষ্টি করে। (ঘ) কোশান্তর ব্যাপন ও অভিস্রবণে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ সাইটোপ্লাজম কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রোটোপ্লাজমের যে অর্ধতরল স্বচ্ছ ও দানাদার পদার্থ নিউক্লিয় পর্দা ও কোশপর্দার মাঝে অবস্থান করে, তাকে সাইটোপ্লাজম বলে।

প্রশ্নঃ কোশ অঙ্গাণু কাকে বলে ?

উত্তরঃ আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে পর্দা বেষ্টিত বা পর্দাবিহীন যে সব অঙ্গাণু কোশের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে তাদের কোশ অঙ্গাণু বলে।

প্রশ্নঃ সাইটোপ্লাজমের কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ সাইটোপ্লাজম কোশ অঙ্গাণুগুলির ধাত্র হিসেবে কাজ করে। কোশের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াগুলি সাইটোপ্লাজমে সাধিত হয়। কোশের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়ার প্রধান স্থান হল ধাত্র। সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের সাহায্যে কোশের বিভিন্ন বিপাক ক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্নঃ আদর্শ কোশের সবচেয়ে বড়ো কোশ অঙ্গাণু কোন্‌টি ?

উত্তরঃ নিউক্লিয়াস।

প্রশ্নঃ নিউক্লিয়াসকে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ নিউক্লিয়াস একটি দ্বি-একক পর্দাবেষ্টিত প্রোটোপ্লাজমীয় অংশ যার মধ্যে সকল প্রকার বংশগত তথ্যবলি উপস্থিত। নিউক্লিয়াস কোশের বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করায় একে ‘কোশের মস্তিস্ক’ বলা হয়।

প্রশ্নঃ কে প্রথম নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ রবার্ট ব্রাউন ১৮৩১ সালে।

প্রশ্নঃ একটি আদর্শ নিউক্লিয়াস কয়টি অংশ নিয়ে গঠিত ও কী কী ?

উত্তরঃ চারটি অংশ নিয়ে গঠিত, যথা – (ক) নিউক্লিয় পর্দা (খ) নিউক্লিওলাস (গ) নিউক্লিওপ্লাজম (ঘ) নিউক্লিয় জালিকা।

è (ক) নিউক্লিয় পর্দাঃ এটি নিউক্লিয়াসকে বেষ্টন করে থাকা দুটি একক পর্দা দিয়ে গঠিত যা লাইপোপ্রোটিন নির্মিত। à নিউক্লিয় পর্দায় যে অসংখ্য ছিদ্র থাকে, তাদের নিউক্লিয় ছিদ্র বলে।

è (খ) নিউক্লিওলাসঃ এটি নিউক্লিয়াস মধ্যস্থ ঘন গোলাকার অংশ বিশেষ। à নিউক্লিওলাসের ৪ টি অংশ থাকে, যথা – (ক) অনিয়তাকার অঞ্চল (খ) দানাদার অঞ্চল (গ) সূত্রাকার অঞ্চল (ঘ) ক্রোমাটিন অঞ্চল।

è (গ) নিউক্লিওপ্লাজমঃ নিউক্লিয় পর্দা এবং নিউক্লিওলাসের অন্তর্বর্তী স্থানে যে স্বচ্ছ, অর্ধতরল কোলডীয় পদার্থ থাকে, তাকে নিউক্লিওপ্লাজম বলে।

প্রশ্নঃ ক্রোমাটিন সূত্র কাকে বলে ?

উত্তরঃ নিউক্লিওপ্লাজমে অসংখ্য সূক্ষ্ম প্যাঁচানো সূত্রাকার অংশ থাকে, এদের ক্রোমাটিন সূত্র বলে।

প্রশ্নঃ নিউক্লিয়াসের কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) নিউক্লিয়াস আদর্শ কোশের একটি প্রয়োজনীয় ও সংযোজক অংশ যা কোশের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রন করে। (খ) নিউক্লিয়াসের জেনেটিক পদার্থ DNA কোশ থেকে কোশে এবং জীব থেকে জীবে বংশগত বৈশিষ্ট্যাবলি বহন করে। (গ) নিউক্লিয়াস RNA ও প্রোটিন সংশ্লেষ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। (ঘ) নিউক্লিয়াস কোশ বিভাজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্নঃ মাইটোকন্ড্রিয়া কাকে বলে ?

উত্তরঃ মাইটোকন্ড্রিয়া হল আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত দ্বিএকক পর্দা ঘেরা ক্ষুদ্র দন্ডাকার বা সূত্রাকার অঙ্গাণু, যার মধ্যে শক্তি উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ কে মাইটোকন্ড্রিয়া আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ বেন্ডা ১৮৯৮ সালে।

প্রশ্নঃ একটি আদর্শ মাইটোকন্ড্রিয়া কয়টি পর্দা নিয়ে গঠিত ও কী কী ?

উত্তরঃ দুটি পর্দা নিয়ে গঠিত – (ক) বহিঃপর্দা (খ) অন্তঃপর্দা। à দুটি প্রকোষ্ঠ থাকে – (ক) বহিঃপ্রকোষ্ঠ (খ) অন্তঃপ্রকোষ্ঠ।

প্রশ্নঃ অন্তঃপ্রকোষ্ঠ কাকে বলে ?

উত্তরঃ মাইটোকন্ড্রিয়ার অন্তঃপর্দা ঘেরা ভিতরের প্রকোষ্ঠকে অন্তঃপ্রকোষ্ঠ বলে।

প্রশ্নঃ মাইটোকন্ড্রিয়ার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) মাইটোকন্ড্রিয়া সবাত শ্বশনে ক্রেবস চক্রের বিক্রিয়াগুলি ঘটতে সাহায্য করে। (খ) অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশনের মাধ্যমে ATP উৎপাদন করে যা সমস্ত প্রকার জীবজ ক্রিয়ার জন্য শক্তি জোগায়। (গ) মাইটোকন্ড্রিয়ায় ফ্যাটি অ্যাসিড সংশ্লেষ এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের β-জারণ সংঘটিত হয়।

প্রশ্নঃ মাইটোকণ্ড্রিয়াকে কোশের শক্তিঘর বলে কেন ?

উত্তরঃ মাইটোকণ্ড্রিয়ার মধ্যে কোশের শক্তি উৎপন্ন হয়, এই কারণে মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোশের শক্তিঘর বলে।

প্রশ্নঃ প্লাস্টিড কী ? কে কবে প্লাস্টিড নামকরণ করেন ?

উত্তরঃ প্লাস্টিড হল আদর্শ উদ্ভিদ কোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত দ্বিএকক পর্দা বেষ্টিত বিভিন্ন আকৃতি বিশিষ্ট রঞ্জক পদার্থযুক্ত বা রঞ্জকবিহীন অঙ্গাণু।

è হেকেল ১৮৬৬ সালে প্লাস্টিড নামকরণ করেন।

প্রশ্নঃ প্লাস্টিড কত প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ তিন প্রকার – (ক) ক্রোমোপ্লাস্ট বা রঙিন প্লাস্টিড (খ) ক্লোরোপ্লাস্ট বা সবুজ প্লাস্টিড (গ) লিউকোপ্লাস্ট বা বর্ণহীন প্লাস্টিড।

প্রশ্নঃ ক্রোমোপ্লাস্ট কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি এবং কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ উদ্ভিদকোশের সবুজ রঞ্জক পদার্থ ছাড়া অন্যান্য রঞ্জক পদার্থযুক্ত প্লাস্টিডদের ক্রোমোপ্লাস্ট বলা হয়।

è বৈশিষ্ট্যঃ (ক) এরা গোলাকার, দণ্ডাকার, তারকাকার ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির হয়। (খ) ফুলের পাপড়ি, পাকা ফলের খোসা, গাজরের মূলে এইপ্রকার প্লাস্টিড থাকে। (গ) এইপ্রকার প্লাস্টিড দ্বি-একক পর্দাবেষ্টিত থাকে। (ঘ) এদের ধাত্রে গ্রানা থাকে না। ধাত্রে ল্যামেলা, ক্যারোটিনয়েড দানা, বিভিন্ন প্রকারের রঞ্জক এবং স্নেহবস্তু ইত্যাদি থাকে।

è কাজঃ ক্রোমোপ্লাসটিড উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশের বর্ণ গঠন, ফুলের পরাগযোগ ও ফলের বিস্তারে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ ক্লোরোপ্লাস্ট কাকে বলে ? এর কয়টি অংশ ও কী কী ? এদের বৈশিষ্ট্যগুলি ও কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ সবুজ প্লাস্টিডদের ক্লোরোপ্লাস্ট বলে।

è এর তিনটি অংশ – (ক) আবরণী (খ) ধাত্র বা ম্যাট্রিক্স এবং  (গ) থাইলাকয়েড।

è বৈশিষ্ট্যঃ (ক) প্রতিটি ক্লোরোপ্লাস্ট দুটি একক পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে। ক্লোরোপ্লাস্টের পর্দা ত্রিস্তরীয় এবং লাইপোপ্রোটিন নির্মিত। (খ) ক্লোরোপ্লাস্টের DNA নগ্ন, চক্রাকার বা রেখাকার হয়। ক্লোরোপ্লাস্টের রাইবোজোম 70s প্রকৃতির। (গ) ক্লোরোপ্লাস্টের ধাত্রে উপস্থিত উৎসেচক সালোকসংশ্লেষ অন্ধকার বিক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।

è কাজঃ (ক) এর গ্রানা অঞ্চলে সালোকসংশ্লেষের আলোক বিক্রিয়া এবং স্ট্রোমা অঞ্চলে সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার বিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। (খ) ক্লোরোপ্লাস্টে অবস্থিত রাইবোজোম প্রোটিন সংশ্লেষে অংশ নেয়।

প্রশ্নঃ লিউকোপ্লাস্ট কাকে বলে ? কয় প্রকার ও কী কী ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি ও কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ বর্ণহীন প্লাস্টিডদের লিউকোপ্লাস্ট বলে।

è প্রকারভেদঃ তিন প্রকার – (ক) অ্যামাইলোপ্লাস্ট (খ) এলাইওপ্লাস্ট (গ) প্রোটিনোপ্লাস্ট।

è বৈশিষ্ট্যঃ (ক) লিউকোপ্লাস্ট উদ্ভিদের মূলের কোশে এবং যেসব অঙ্গের কোশে সূর্যের আলো পৌঁছায় না সেইসব কোশে থাকে। (খ) এইরকম প্লাস্টিড গোলাকার, ডিম্বাকার, দণ্ডাকার হয়। (গ) এইপ্রকার প্লাস্টিড দ্বি-একক পর্দা বেষ্টিত থাকে। (ঘ) ধাত্রে গ্রানা থাকে না।

è কাজঃ বিভিন্ন রকম খাদ্যবস্তু সঞ্চিত রাখা এদের কাজ।

প্রশ্নঃ গলগি বডিস বা গলগি কমপ্লেক্স বা গলগি বস্তু কাকে বলে ? এটি কে প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন ?

উত্তরঃ গলগি বডিস আদর্শ কোশে সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের নিকটে অবস্থিত একক পর্দা ঘেরা চ্যাপ্টা থলির মতো বা ক্ষুদ্র গহ্বরের মতো অঙ্গাণুবিশেষ।

è ক্যামিলো গলগি ১৮৯৮ সালে প্রথম গলগি বডি পর্যবেক্ষণ করেন।

প্রশ্নঃ কোশ গহ্বর বা ভ্যাকুওল কাকে বলে ?

উত্তরঃ আদর্শ কোশের সাইটোপ্লাজমে আবরণী বেষ্টিত যে সাইটোপ্লাজম বিহীন গহ্বরের মতো অংশগুলি থাকে তাদের কোশগহ্বর বা ভ্যাকুওল বলে।  

প্রশ্নঃ গলগি বডির কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) গলগি বডি উৎসেচক, হরমোন, মিউকাস পদার্থ ইত্যাদি ক্ষরণ করে। (খ) গলগি বডি কোশ-মধ্যস্থ বিভিন্ন পদার্থ পরিবহণে সহায়তা করে। (গ) গলগি বডি বিভিন্ন প্রকার খাদ্যবস্তুর সঞ্চয় ভান্ডার হিসেবে কাজ করে। (ঘ) গলগি বডি কোশ প্রাচীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। (ঙ) গলগি বডি শুক্রাণুর অ্যাক্রোজোম গঠন করে।

প্রশ্নঃ লাইসোজোম কী ? কে কবে লাইসোজোম আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ লাইসোজোম আদর্শ প্রাণী কোশের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত একক পর্দা ঘেরা উৎসেচক পূর্ণ ক্ষুদ্র থলির মতো অঙ্গাণু।

è ডি ডুভে ১৯৫৫ সালে লাইসোজোম আবিষ্কার করেন।

প্রশ্নঃ কাকে সুইসাইড ব্যাগ বা আত্মঘাতী থলি বলে ও কেন ?

উত্তরঃ লাইসোজোমকে সুইসাইড ব্যাগ বা আত্মঘাতী থলি বলে। লাইসোজোম পর্দাকৃত উৎসেচকযুক্ত থলিবৎ অঙ্গাণু। লাইসোজোম কর্তৃক নিঃসৃত উৎসেচকের দ্বারা কোষ-উপাংশগুলি পাচিত হয়ে ধ্বংস প্রাপ্ত হওয়ায় লাইসোজোমকে আত্মঘাতী থলি বা সুইসাইডাল ব্যাগ বলে।

প্রশ্নঃ লাইসোজোমের গঠন ও বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) লাইসোজোম সাধারণত গোলাকার গহ্বর বা থলির মতো। (খ) প্রতিটি লাইসোজোম লাইপোপ্রোটিন নির্মিত একক পর্দা দিয়ে বেষ্টিত থাকে। (গ) একস্তরীয় পর্দাবৃত লাইসোজোম থলিটির অভ্যন্তরে আর্দ্রবিশ্লেষণকারি বিভিন্ন উৎসেচক বর্তমান। থলিটি বিদীর্ণ হয়ে এই উৎসেচকগুলি সাইটোপ্লাজমে প্রবেশ করে বিভিন্ন কোশীয় অঙ্গাণুসমূহের পাচন ঘটিয়ে কোশটির মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। (ঘ) প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজম-এর লাইসোজাইম নামক কোশীয় অঙ্গাণুটি নানারূপে উপস্থিত থাকতে পারে।

প্রশ্নঃ বহুরূপতাযুক্ত/পলিমরফিক কোশীয় অঙ্গাণু কাকে বলা হয় ?

উত্তরঃ লাইসোজোমকে।

প্রশ্নঃ লাইসোজোমের কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) অন্তঃকোশীয় পাচনঃ ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোশে গৃহীত খাদ্যবস্তু লাইসোজোম নিঃসৃত উৎসেচকের সাহায্যে পাচিত হয়। (খ) বহিঃকোশীয় পাচনঃ লাইসোজোম উৎসেচক নিক্ষেপ করে বহিঃকোশীয় পাচন ঘটায়। (গ) দেহের প্রতিরক্ষাঃ শ্বেতকণিকার লাইসোজোম উৎসেচক নিক্ষেপ করে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি ধ্বংস করে।

প্রশ্নঃ ভ্যাকুওল-এর গঠন বা বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) ভ্যাকুওল দেখতে অনেকটা গহ্বরের মতো। (খ) এদের নির্দিষ্ট কোনো আকার থাকে না। (গ) গহ্বরগুলি টোনোপ্লাস্ট নামক একটি সূক্ষ্ম আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে। (ঘ) প্রাণীকোশের ভ্যাকুওলগুলি আকারে খুব ছোটো এবং সংখ্যায় কম হয়। (ঙ) অনেকসময় প্রাণীকোশের ভ্যাকুওল থাকে না। (চ) পরিণত উদ্ভিদকোশে ভ্যাকুওলগুলি পরস্পর মিলিত হয়ে একটি বড়ো ভ্যাকুওল সৃষ্টি করে।

প্রশ্নঃ ভ্যাকুওল-এর কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ ভ্যাকুওলে খাদ্য, ক্ষরিত পদার্থ ইত্যাদি জমা থাকে। এছাড়া অভিস্রবণ নিয়ন্ত্রণ, রেচন পদার্থ বা বর্জ্য পদার্থ সঞ্চয় ও দূরীকরণ প্রভৃতিতে ভ্যাকুওল সাহায্য করে। এককোশী মূলরোমের ভ্যাকুওল অন্তঃঅভিস্রবণে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ রাইবোজোম কী ? কে প্রথম রাইবোজোম নামকরণ করেন ?

উত্তরঃ রাইবোজোম প্রোটিন সংশ্লেষে সহায়ককারী পর্দাবিহীন ক্ষুদ্র গোলাকার বা উপবৃত্তাকার কোশ অঙ্গাণু। এরা আদি কোশের সাইটোপ্লাজমে এবং আদর্শ কোশের নিউক্লিওলাসে, নিউক্লিয় পর্দায়, ER-এর গাত্রে অবস্থান করে।

è প্যালাডে ১৯৫৫ প্রথম রাইবোজোম নামকরণ করেন।

প্রশ্নঃ রাইবোজোমের গঠন ও বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) রাইবোজোমের আকার প্রায় উপবৃত্তাকার এবং দু-পাশ থেকে ঈষৎ চ্যাপ্টা। (খ) প্রতিটি রাইবোজোম দুটি উপএকক বা অধঃএকক নিয়ে গঠিত। (গ) প্রোক্যারিওটিক এবং ইউক্যারিওটিক রাইবোজোমসমূহ যথাক্রমে 70s এবং 80s নামে পরিচিত। (ঘ) রাইবোজোমের প্রত্যেকটি উপএকক গঠিত হয় রাইবোজোমাল প্রোটিন এবং RNA দ্বারা।

প্রশ্নঃ রাইবোজোমের কাজগুলি লেখো। অথবা, রাইবোজোমকে প্রোটিন ফ্যাক্টরি বলে কেন ? 

উত্তরঃ রাইবোজোমের প্রধান কাজ হল প্রোটিন সংশ্লেষ করা। m-RNA –এর নির্দেশ অনুসারে এরা প্রোটিন সংশ্লেষ করে। এই কারণে রাইবোজোমকে প্রোটিন ফ্যাক্টরি বলে।

প্রশ্নঃ ভেদবার্গের একক কাকে বলে ?

উত্তরঃ S-কে ভেদবার্গের একক বলে।

প্রশ্নঃ সেন্ট্রিওল কী ? কে কবে এটি নামকরণ করেন ?

উত্তরঃ সেন্ট্রিওল দেখতে দুমুখ খোলা পিপের মতো। সাধারণত প্রাণী কোশের সাইটোপ্লাজমে নিউক্লিয়াসের নিকটে সমকোণে অবস্থান করে। এরা কোশ বিভাজনের সময় বেম গঠন করে।

è বোভেরি ১৮৮৮ সালে সেন্ট্রিওল আবিষ্কার করেন।

প্রশ্নঃ সেন্ট্রিওলের গঠন বা বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ সেন্ট্রিওল দুটি দেখতে অনেকটা দু-মুখ খোলা পিপের মতো। দুটি পরস্পর  প্রায় সমকোণে বিন্যস্ত থাকে। সেন্ট্রিওলের প্রাচীর ৯ টি ত্রয়ী অণুনালিকা নিয়ে গঠিত। প্রতিটি অণুনালিকা সমদূরত্বে অবস্থিত ৩ টি করে উপনালিকা নিয়ে গঠিত। প্রস্থচ্ছেদে সেন্ট্রিওলের কেন্দ্রে একটি গোরুর চাকার মতো সংগঠন দেখা যায়।

প্রশ্নঃ সেন্ট্রিওলের কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) প্রাণীকোশ বিভাজনকালে বেমতন্তু গঠন করে। (খ) কোশ বিভাজনের শেষের দিকে ক্রোমোজোমের প্রান্তীয় গমনে সাহায্য করে। (গ) সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলাযুক্ত কোশে সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলার সৃষ্টি করে। (ঘ) শুক্রাণুর পুচ্ছ গঠন করে।

প্রশ্নঃ কোশ কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই প্রকার – (ক) আদি কোশ বা প্রোক্যারিওটিক কোশ (খ) আদর্শ কোশ বা ইউক্যারিওটিক কোশ।

è (ক) প্রোক্যারিওটিক কোশঃ যেসব কোশে আদর্শ এবং সংগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না, কোশে পর্দাঘেরা কোশ-অঙ্গাণু থাকে না, ক্রোমোজোম গঠিত হয় না, তাদের আদিকোশ বা প্রোক্যারিওটিক কোশ বলে। যেমন – ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ-সবুজ শৈবাল ইত্যাদি।

è (খ) ইউক্যারিওটিক কোশঃ যেসব কোশে নিউক্লিয়াসটি সংগঠিত (নিউক্লিয় পর্দা, নিউক্লিওপ্লাজম, নিউক্লিওলাস এবং নিউক্লিয়জালক) এবং নিউক্লিয় পর্দাবেষ্টিত, ক্রোমোজোম ক্ষারীয় প্রোটিনযুক্ত, কোশে পর্দাঘেরা একাধিক কোশ অঙ্গাণু থাকে, তাদের আদর্শ কোশ বা ইউক্যারিওটিক কোশ বলে। যেমন – উন্নত উদ্ভিদকোশ ও প্রাণীকোশ।

প্রশ্নঃ মেসোক্যারিওটিক কোশ কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে সমস্ত কোশের ক্ষেত্রে ইউক্যারিওটদের মতন সুগঠিত নিউক্লিয়াস এবং কোশীয় সংগঠন উপস্থিত থাকলেও নিউক্লিয়াসটি অ্যামাইটোসিস পধতিতে বিভাজিত হয়, তাদের মেসোক্যারিওটিক কোশ বলা হয়।

প্রশ্নঃ প্রোক্যারিওটিক কোশ ও ইউক্যারিওটিক কোশ-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ

বিষয়

প্রোক্যারিওটিক কোশ

ইউক্যারিওটিক কোশ

১. কোশপ্রাচীর

কোশপ্রাচীর থাকে।

উদ্ভিদকোশে কোশপ্রাচীর থাকে এবং প্রাণীকোশে কোশপ্রাচীর থাকে না।

২. কোশঅঙ্গাণু

আদি কোশে পর্দাঘেরা কোনো কোশ-অঙ্গাণু থাকে না।

এই কোশে পর্দাঘেরা কোশ-অঙ্গাণু থাকে।

৩. রাইবোজোম

70s প্রকৃতির এবং ক্ষুদ্র।

80s প্রকৃতির এবং বড়ো।

৪. শ্বসন উৎসেচক

সাইটোপ্লাজমে বা প্লাজমাপর্দার অন্তঃগোত্রে থাকে।

সাইটোপ্লাজমে এবং মাইটোকন্ড্রিয়ার মধ্যে থাকে।

৫. ক্রোমোজোম

সাধারণত থাকে না।

নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রোমোজোম থাকে।

৬. কোশ বিভাজন

অ্যামাইটোসিস পদ্ধতিতে ঘটে।

মাইটোসিস এবং মিয়োসিস পদ্ধতিতে ঘটে।

৭. ভ্যাকুওল

সাধারণত থাকে না।

উদ্ভিদকোশে থাকে, প্রাণীকোশে সাধারণত থাকে না।

প্রশ্নঃ উদ্ভিদকোশের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) উদ্ভিদ কোশে সজীব কোশ পর্দার বাইরে জড়, পুরু, স্থিতিস্থাপক, সেলুলোজ নির্মিত কোশ প্রাচীর উপস্থিত। (খ) উদ্ভিদ কোশের সাইটোপ্লাজমে দ্বিএকক পর্দা বেষ্টিত প্লাস্টিড থাকে। (গ) উদ্ভিদ কোশে সেন্ট্রিওল ও লাইসোজোম সাধারণত থাকে না।

প্রশ্নঃ প্রাণীকোশের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) প্রাণীকোশের প্রোটোপ্লাজমকে বেষ্টন করে সজীব কোশপর্দা উপস্থিত। (খ) প্রাণীকোশের নিউক্লিয়াসের নিকটে একজোড়া সেন্ট্রিওল উপস্থিত। (গ) প্রাণীকোশের সাইটোপ্লাজমে একক পর্দাবেষ্টিত লাইসোজোম উপস্থিত। (ঘ) প্রাণীকোশে সাধারণত প্লাস্টিড থাকে না।

প্রশ্নঃ উদ্ভিদকোশ ও প্রাণীকোশের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ

বিষয়

উদ্ভিদকোশ

প্রাণীকোশ

১. কোশপ্রাচীর

থাকে।

থাকেনা।

২. পিনোসাইটিক গহ্বর

গঠিত হয় না।

গঠিত হয়।

৩. ক্লোরোপ্লাস্ট

থাকে।

থাকেনা।

৪. সেন্ট্রোজোম

অনুপস্থিত।

উপস্থিত।

৫. লাইসোজোম

সাধারণত থাকে না।

থাকে।

৬. ভ্যাকুওল

সংখ্যায় অনেক এবং অপেক্ষাকৃত বড়ো আকারের।

সংখ্যায় কম ও ক্ষুদ্র। অনেক ক্ষেত্রে থাকে না।

প্রশ্নঃ কলা বা টিস্যু কী ?

উত্তরঃ উৎপত্তিগতভাবে এক, এরূপ সম বা বিষম আকৃতির ও প্রকৃতির কতকগুলি কোশ যখন সঙ্ঘবদ্ধভাবে অবস্থান করে একটি নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদন করে, তখন ওই কোশসমষ্টিকে কলা বা টিস্যু বলে।

প্রশ্নঃ উদ্ভিদ কলা কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ দুই প্রকার – (ক) ভাজক কলা (খ) স্থায়ী কলা।

è স্থায়ী কলা আবার দুই প্রকার – (ক) সরল স্থায়ী কলা (খ) জটিল স্থায়ী কলা।

è সরল স্থায়ী কলা তিন প্রকার – (ক) প্যারেনকাইমা (খ) কোলেনকাইমা (গ) স্ক্লেরেনকাইমা।

è জটিল স্থায়ী কলা দুই প্রকার – (ক) জাইলেম (খ) ফ্লোয়েম।

প্রশ্নঃ ভাজক কলা কাকে বলে ? ভাজক কলার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ একই আকৃতিসম্পন্ন, পাতলা কোশপ্রাচীরবিশিষ্ট, সর্বদা বিভাজনে সক্ষম তরুণ কোশ সমষ্টিকে ভাজক কলা বলে।

è বৈশিষ্ট্যঃ (ক) ভাজক কলার কোশগুলি আকারে সাধারণত ছোটো এবং দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে প্রায় সমান হয়। (খ) কোশগুলি গোলাকার, ডিম্বাকার অথবা বহুভুজাকার হয়। (গ) কোশপ্রাচীর খুব পাতলা। গৌণ কোশপ্রাচীর স্তর অনুপস্থিত। (ঘ) কোশগুলি ঘনসন্নিবিষ্টভাবে অবস্থান করায় কোশগুলির মাঝে কোনো ফাঁকা স্থান অর্থাৎ কোশান্তর রন্ধ্র থাকে না। (ঙ) প্রতিটি কোশ ঘন, দানাদার সাইটোপ্লাজমে পূর্ণ থাকে। (চ) কোশগুলি সর্বদাই বিভাজনে সক্ষম।

প্রশ্নঃ ভাজক কলা কোথায় দেখা যায় ?

উত্তরঃ উদ্ভিদের বর্ধিষ্ণু অঞ্চলে, যেমন – মূল, কান্ডের অগ্রভাগে কাক্ষিক মুকুল এবং পুষ্প মুকুলে ভাজক কলা দেখা যায়। তাছাড়া ব্যক্তবীজী ও গুপ্তবীজী উদ্ভিদের নালিকা বান্ডিলে পার্শ্বস্থ ভাজক কলা থাকে।

প্রশ্নঃ ভাজক কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) এই কলার কোশগুলি ক্রমাগত মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ও উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়। (খ) ভাজক কলা উদ্ভিদদেহে নতুন অঙ্গ সৃষ্টির সূত্রপাত ঘটায়। (গ) ভাজক কলার কোশ থেকেই স্থায়ী কলার উৎপত্তি ঘটে।

প্রশ্নঃ ভাজক কলা কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ তিন প্রকার – (ক) অগ্রস্থ ভাজক কলা (খ) পার্শ্বস্থ ভাজক কলা (গ) নিবেশিত ভাজক কলা।

è উৎপত্তি অনুযায়ী ভাজক কলা ২ ভাগে ভাগ করা হয় – (ক) প্রাথমিক ভাজক কলা (খ) গৌণ ভাজক কলা।

প্রশ্নঃ স্থায়ী কলা কাকে বলে ? স্থায়ী কলার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ ভাজক কলা থেকে উৎপন্ন এবং বিভাজনে অক্ষম – এইরকম পরিণত কলাকে স্থায়ী কলা বলে।

è বৈশিষ্ট্যঃ (ক) কোশগুলি আকারে সাধারণত গোলাকার, ডিম্বাকার, বহুভুজাকার ইত্যাদি হয়। (খ) কোশগুলি পাতলা বা পুরু কোশপ্রাচীরযুক্ত হয়। (গ) এই কলার কোশগুলি সজীব অথবা মৃত হতে পারে। (ঘ) এই কলার কোশগুলির মধ্যে ভ্যাকুওল থাকে। (ঙ) কোশগুলির মধ্যে কোশান্তর-রন্ধ্র থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে।

è উদ্ভিদের মূল, কান্ড, পাতা প্রভৃতি প্রায় সব অঙ্গেই এই কলা থাকে।

প্রশ্নঃ স্থায়ী কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করে। (খ) খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। (গ) খাদ্য ও জল সংবহনে সাহায্য করে। (ঘ) খাদ্য ও জল সঞ্চয়ে সাহায্য করে। (ঙ) রক্ষণমূলক কাজে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ সরল স্থায়ী কলা কাকে বলে ?

উত্তরঃ যেসব স্থায়ী কলার কোশের আকৃতি ও প্রকৃতি একই প্রকার হয়, তাকে সরল স্থায়ী কলা বলে।

প্রশ্নঃ প্যারেনকাইমা, কোলেনকাইমা ও স্ক্লেরেনকাইমা-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ

বিষয়

প্যারেনকাইমা

কোলেনকাইমা

স্ক্লেরেনকাইমা

অবস্থান

উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড, পাতা ইত্যাদি অংশে এই কলা থাকে।

দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের কান্ডের ত্বকের নীচে এই কলা থাকে।

একবীজপত্রী উদ্ভিদের কান্ডের নালিকা বান্ডিলের চারপাশে, দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদের নালিকা বান্ডিল টুপিতে, আপেল, পেয়ারা প্রভৃতি ফলের শাঁসে এই কলা থাকে।

বৈশিষ্ট্য

১. এই কলার কোশগুলি সজীব। ২. এই কলায় কোশান্তর রন্ধ্র থাকে।

১. এই কলার কোশগুলি সজীব। ২. এই কলায় কোশান্তর রন্ধ্র থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে।

১. এই কলার কোশগুলি মৃত। ২. এই কলায় কোশান্তর রন্ধ্র থাকে না।

কাজ

খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য সঞ্চয় ও সংবহন এই কলার প্রধান কাজ।

উদ্ভিদকে দৃঢ়তা প্রদান করা, ক্লোরোপ্লাস্ট থাকলে খাদ্য প্রস্তুত করা এই কলার প্রধান কাজ।

দৃঢ়তা প্রদান করা এই কলার প্রধান কাজ।

প্রশ্নঃ জটিল স্থায়ী কলা কাকে বলে ?

উত্তরঃ আকার ও গঠন ভিন্ন হওয়া সত্ত্বেও একইরকম কার্য অসম্পন্নকারী এবং একই উৎস থেকে সৃষ্টি হয়েছে এমন কোশ সমষ্টি নিয়ে গঠিত স্থায়ীকলাকে জটিল স্থায়ী কলা বলে।

প্রশ্নঃ জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলার মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ

বিষয়

জাইলেম

ফ্লোয়েম

অবস্থান

উদ্ভিদের মূল, কান্ড ও পাতার নালিকা বান্ডিলে অবস্থিত।

উদ্ভিদের মূল, কান্ড ও পাতার নালিকা বান্ডিলে অবস্থিত।

উপাদান

জাইলেমের উপাদানগুলি হল ট্র্যাকিয়া, ট্র্যাকিড, জাইলেম প্যারেনকাইমা ।

ফ্লোয়েমের উপাদানগুলি হল সিভ কোশ, সিভ নল ফ্লোয়েম তন্তু।

বৈশিষ্ট্য

জাইলেম প্যারেনকাইমা ছাড়া জাইলেমের সব উপাদান মৃত।

ফ্লোয়েম তন্তু ছাড়া ফ্লোয়েমের সব উপাদান সজীব।

কাজ

জাইলেমের মাধ্যমে মূলরোম দ্বারা শোষিত জল ও জলে দ্রবীভূত খনিজলবণ ঊর্ধ্বমুখে বাহিত হয়।

ফ্লোয়েমের মাধ্যমে পাতায় উৎপন্ন তরল খাদ্য সমগ্র উদ্ভিদ দেহে পরিবাহিত হয়।

প্রশ্নঃ প্রাণীকলা কাকে কয় প্রকার ও কী কী ?

উত্তরঃ চার প্রকার – (ক) আবরণী কলা (খ) যোগকলা (গ) পেশিকলা (ঘ) স্নায়ুকলা।

প্রশ্নঃ আবরণী কলা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ ত্বক, বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মুক্ত তলে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ আবরণী কলার বৈশিষ্ট্য গুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) এই কলার ভিত্তিপর্দা থাকে। (খ) কোশগুলি ভিত্তিপর্দার ওপর একস্তরে বা বহুস্তরে সজ্জিত থাকে। (গ) কোশগুলি ঘনসন্নিবিষ্টভাবে অবস্থান করে তাই আন্তঃকোশীয় পদার্থের পরিমাণ খুব কম। (ঘ) আবরণী কলার কোশগুলি চ্যাপ্টা আঁশের মতো।
প্রশ্নঃ আবরণী কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) এই কলা অঙ্গ ও তন্ত্রকে যান্ত্রিক আঘাত থেকে এবং রাসায়নিক বস্তুর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। (খ) এই কলা মিউকাস, উৎসেচক, হরমোন ইত্যাদি ক্ষরণ করে। (গ) গ্যাসীয় আদানপ্রদানে অংশগ্রহণ করে।

প্রশ্নঃ যোগকলা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ যোগকলা দেহের প্রায় সর্বত্রই থাকে। দেহত্বকের নীচে, পেশি কলার অন্তর্বর্তী স্থানে, অস্থি, তরুণাস্থি ইত্যাদি স্থানে এই কলা অবস্থিত।

প্রশ্নঃ যোগকলার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) এই কলার ভিত্তিপর্দা থাকে না। (খ) এই কলায় কোশ উপাদান অপেক্ষা ধাত্রের পরিমাণ বেশি। (গ) ধাত্র তরল, অর্ধতরল বা কঠিন হতে পারে। (ঘ) এই কলা আদি ভ্রুণের মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ যোগ কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) বিভিন্ন কলা ও অঙ্গের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করা এই কলার প্রধান কাজ। (খ) তরল যোগকলা সারা দেহ কোশে পুষ্টি প্রদান করে, শ্বাসবস্তু পরিবহন করে। (গ) অস্থি কলা প্রাণীদেহের ভার বহন করে এবং দেহের কাঠামো গঠন করে।

প্রশ্নঃ পেশি কলা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ দেহের বিভিন্ন অস্থির সঙ্গে সংলগ্নভাবে, হৃৎপিণ্ডে এবং বিভিন্ন আন্তরযন্ত্রে এই কলা অবস্থিত।

প্রশ্নঃ পেশি কয় প্রকার ও কি কি ?

উত্তরঃ ৩ প্রকার – (ক) ঐচ্ছিক (খ) অনৈচ্ছিক (গ) হৃদ্‌পেশি।

প্রশ্নঃ পেশি কলার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) পেশি কলা পেশি কোশ দিয়ে গঠিত। (খ) পেশি কোশগুলিতে এক বা একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। (গ) পেশি কোশের আবরণীকে সারকোলেমা এবং সাইটোপ্লাজমকে সারকোপ্লাজম বলে। (ঘ) পেশি তন্তু শাখাহীন বা শাখান্বিত হয়।

প্রশ্নঃ পেশি কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ (ক) পেশি গঠন, প্রাণীদেহের আকৃতি প্রদান। (খ) দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে রক্ষা কর। (গ) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনে, চলন ও  গমনে, পৌষ্টিক নালির মধ্যে খাদ্য সঞ্চালনে, নিশ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে।

প্রশ্নঃ স্নায়ু কলা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ স্নায়ু কলা মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকান্ড এবং স্নায়ুতে থাকে।

প্রশ্নঃ স্নায়ু কলার বৈশিষ্ট্য লেখো।

snau.jpgউত্তরঃ (ক) স্নায়ুকলা স্নায়ুকোশ বা নিউরোন এবং নিউরোগ্লিয়া দিয়ে গঠিত। (খ) প্রতিটি স্নায়ুকোশ কোশ দেহ, অ্যাক্সন ও ডেনড্রন দ্বারা গঠিত। (গ) কোশ দেহ গোলাকার, ডিম্বাকার, নক্ষত্রাকার। (ঘ) ডেনড্রন স্নায়ুকোশের ক্ষুদ্র শাখা-প্রশাখা যুক্ত প্রবর্ধক। (ঙ) স্নায়ুকোশের সেন্ট্রোজোমটি নিষ্ক্রিয়।

প্রশ্নঃ স্নায়ু কলার কাজগুলি লেখো।

উত্তরঃ স্নায়ু কলার মাধ্যমে প্রাণীদেহের উদ্দীপনা গ্রহণ, উদ্দীপনা পরিবহণ এবং উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়া কাজগুলি সুসম্পন্ন হয়।

প্রশ্নঃ স্নায়ু কলার চিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।

স্নায়ু কলা.jpgউত্তরঃ

 

অথবা

 
 


                                                 

 

 

প্রশ্নঃ অঙ্গ বা অরগ্যান কাকে বলে ?

উত্তরঃ সম বা বিষম আকৃতি ও প্রকৃতি বিশিষ্ট একাধিক কলা সম্মিলিতভাবে যখন কোনো বিশেষ কার্য সম্পাদন করে, তখন ওই কলা সমষ্টিকে অঙ্গ বা অরগ্যান বলে।

è উদাহরণস্বরূপ – যকৃৎ, পাকস্থলী পৌষ্টিকতন্ত্রের অন্তর্গত অঙ্গ। বৃক্ক, গবিনী রেচনতন্ত্রের অন্তর্গত অঙ্গ।

প্রশ্নঃ মানবদেহে ত্বকের ভুমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) দেহের কোমল অংশকে রক্ষা করে। (খ) দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণে এবং রেচন বস্তু ক্ষরণে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

প্রশ্নঃ মানবদেহে পাকস্থলীর ভূমিকা লেখ।

উত্তরঃ (ক) গৃহীত খাদ্য মুখবিবর থেকে গ্রাসনালির মাধ্যমে পাকস্থলীতে আসে এবং কিছুক্ষণের জন্য সঞ্চিত থাকে। (খ) প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্য পরিপাক করে এবং জল, স্যালাইন, গ্লুকোজ, ভিটামিন ইত্যাদি শোষণ করে।

প্রশ্নঃ পাকস্থলী কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ উদরের ঊর্ধ্বপ্রান্তে মধ্যচ্ছদার নীচে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ অগ্ন্যাশয় কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ পাকস্থলীর পিছনে ডিওডিনামের দুই বাহুর মাঝখানে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহে অগ্ন্যাশয়ের ভূমিকা লেখ।

উত্তরঃ (ক) অগ্ন্যাশয় একটি মিশ্রগ্রন্থি। এর বহিঃক্ষরা কোশ থেকে নানা রকম উৎসেচক নিঃসৃত হয়, যা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট পরিপাকে অংশ নেয়। (খ) অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃক্ষরা কোশ থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। বিটা কোশ ইনসুলিন ও আলফা কোশ গ্লুকাগন ক্ষরণ করে।

প্রশ্নঃ ফুসফুস কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ মানুষের ফুসফুস দুটি বক্ষ গহ্বরে হৃতপিন্ডের দুপাশে মধ্যচ্ছেদার ওপরে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহে ফুসফুসের ভূমিকা লেখ।

উত্তরঃ (ক) প্রশ্বাস এবং নিশ্বাস  ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে। (খ) দেহ থেকে CO2 গ্যাস ও জলীয় বাষ্প নির্গত করে।

প্রশ্নঃ হৃৎপিণ্ড কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ মানুষের হৃৎপিণ্ড বক্ষ গহ্বরে ফুসফুস দ্বয়ের মাঝে ঈষৎ বাম দিক ঘেঁসে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) হৃৎপিণ্ড অবিরাম ছান্দিক গতিতে সংকুচিত ও প্রাসারিত হয়ে সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন করে। (খ) হৃৎপিণ্ড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।

প্রশ্নঃ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের হৃৎপিণ্ডের ওজন কত ?

উত্তরঃ ২৮০ – ৩৪০ গ্রাম।

প্রশ্নঃ প্লিহা কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ প্লিহা উদর গহ্বরের বাম দিকে মধ্যচ্ছদায় নীচে বাম বৃক্কের ওপরে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহের সবচেয়ে বড়ো লসিকা গ্রন্থি কী ?

উত্তরঃ প্লিহা।

প্রশ্নঃ প্রাপ্তবয়স্ক প্লিহার ওজন কত ?

উত্তরঃ ১৫০ গ্রাম।

প্রশ্নঃ বৃক্ক কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ মানুষের বৃক্ক দুটি উদর গহ্বরের কটি অঞ্চলের মেরুদন্ডের দুপাশে পেরিটোনিয়াম পর্দার নীচে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ বৃক্কের ওজন কত ?

উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের প্রতিটি বৃক্কের ওজন ১৫০ গ্রাম এবং স্ত্রীলোকদের ১৩৫ গ্রাম।

প্রশ্নঃ মানবদেহে বৃক্কের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) বৃক্ক মূত্র উৎপন্ন ও নিঃসরণ করে। (খ) বৃক্ক দেহের লবণ ও জলের সাম্যতা বজায় রাখে। (গ) বৃক্ক রেনিন ও এরিথ্রোপয়েটিন হরমোন ক্ষরণ করে।

প্রশ্নঃ যকৃৎ কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ উদর গহ্বরের ডান দিকে মধ্যচ্ছদার নীচে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহের সবচেয়ে বড়ো পৌষ্টিক গ্রন্থি কী ?

উত্তরঃ যকৃৎ।

প্রশ্নঃ যকৃতের ওজন কত ?

উত্তরঃ ১.৫ কেজি।

প্রশ্নঃ মানবদেহে যকৃতের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) যকৃৎ পিত্তরস ক্ষরণ করে পিত্তাশয়ে জমা করে। (খ) যকৃতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট বিপাক ঘটে। (গ) যকৃতে অবস্থিত কুফার কোশ রোগজীবাণুদের ধ্বংস করে। (ঘ) যকৃতে অ্যামোনিয়া থেকে ইউরিয়া উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ মস্তিষ্কের ওজন কত ?

উত্তরঃ একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মস্তিষ্কের ওজন ১২০০-১৫০০ গ্রাম।

প্রশ্নঃ মানবদেহে মস্তিষ্কের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ গুরুমস্তিষ্ক মানুষ তথা প্রাণীদেহের বুদ্ধি, চিন্তা, স্মৃতি ইত্যাদি মানসিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে। (খ) লঘুমস্তিষ্ক প্রাণীদেহের ভারসাম্য বজায় রাখে। (গ) মধ্যমস্তিষ্ক দর্শন ও শ্রবণ ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্নঃ সুষুম্নাকান্ড কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ পৃষ্ঠদেশে মেরুদন্ডের দৈর্ঘ্য বরাবর নিউর‍্যাল ক্যানেলের মধ্যে অবস্থান করে।

প্রশ্নঃ মানবদেহে সুষুম্নাকান্ডের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। (খ) সুষুম্নাকান্ড দেহের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগসূত্র স্থাপন করে।

প্রশ্নঃ শুক্রাশয় কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ পুরুষ মানুষের উদর গহ্বরের বাইরে স্ক্রোটাম নামক থলির মধ্যে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ শুক্রাশয়ের ওজন কত ?

উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্ক লোকের শুক্রাশয়ের ওজন ১০-২৫ গ্রাম।

প্রশ্নঃ মানবদেহে শুক্রাশয়ের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) শুক্রাণু উৎপন্ন করে। (খ) টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরণ করে।

প্রশ্নঃ ডিম্বাশয় কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ স্ত্রী লোকের শ্রোণি গহ্বরের জরায়ুর নীচের দিকের দুপাশে অবস্থিত।

প্রশ্নঃ মানবদেহে ডিম্বাশয়ের ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ (ক) ডিম্বাণু উৎপন্ন করে। (খ) ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন নিঃসরণ করে।

প্রশ্নঃ বৃক্কের চিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।

bbbb.jpegউত্তরঃ

 

 

 

 

 

 

প্রশ্নঃ একটি আদর্শ উদ্ভিদ কোশের চিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।

bb.jpgউত্তরঃ

 

 

 

 

 

 

 

প্রশ্নঃ নিউক্লিয়াসের চিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।

উত্তরঃ nnnn.jpg  

 

 

 

 

প্রশ্নঃ কোশপ্রাচীরের গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো।

উত্তরঃ গঠনঃ (ক) মধ্যপর্দা ……………………………………….।

             (খ) মুখ্য প্রাচীর ………………………………………।

koshpracir.jpg          (গ) গৌণ প্রাচীর ……………………………………….।

 

 

 

 

প্রশ্নঃ DNA এবং RNA –এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ

বিষয়

DNA

RNA

পূর্ণরূপ

ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড

রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড

দৈর্ঘ্য

এটি একটি দীর্ঘ পলিমার শৃঙ্খল।

এটি একটি সংক্ষিপ্ত পলিমার।

পরিমাণ

কোষের জন্য ডিএনএর পরিমাণ নির্দিষ্ট।

একটি কোষের জন্য RNA এর পরিমাণ পরিবর্তনশীল।

জীবনকাল

ডিএনএর জীবনকাল দীর্ঘ।

এর আয়ুষ্কাল কম। কিছু RNA-এর আয়ুষ্কাল খুব কম, আবার কিছু RNA-এর আয়ুষ্কাল বেশি কিন্তু মোটের উপর এর আয়ুষ্কাল কম।

পুনর্নবীকরণের উপর গলে যাওয়ার প্রভাব

গলে যাওয়ার পর এর পুনর্জন্ম ধীর হয়।

দ্রুত

প্রশ্নঃ প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলতে সেই খাদ্যকে বোঝায় যা শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, যা শরীরে প্রোটিনের ব্যবহার কমাতে সাহায্য করে এবং প্রোটিনকে অন্য কাজে ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়। 

      যেমন - শস্য, রুটি, চাল, আলু, মিষ্টি আলু, এবং চিনি জাতীয় খাবার।

প্রশ্নঃ কার্বোহাইড্রেটকে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলে কেন ?

উত্তরঃ কার্বোহাইড্রেট খাদ্যে সঠিক মাত্রায় উপস্থিত থাকলে, শক্তিউৎপাদনে সহায়তা করে। আবার কার্বোহাইড্রেট যকৃৎ ও পেশিতে গ্লাইকোজেনরূপে এবং মেদকলায় স্নেহপদার্থরূপে সঞ্চিত থেকে ভবিষ্যতের শক্তির জোগান দেয়। ফলে কার্বোহাইড্রেটের উপস্থিতিতে খাদ্যথ প্রােটিন দেহ নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, ওই প্রোটিন শক্তি উৎপাদনের পরিবর্তে, দেহ নির্মাণে সহায়তা করতে পারে। এই কারণে কার্বোহাইড্রেটকে প্রােটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলে।

প্রশ্নঃ অক্সিজোম দানা কোথায় থাকে ?

উত্তরঃ অক্সিজোম বা F1 দানা মাইটোকন্ড্রিয়ার অভ্যন্তরীণ পর্দার উপর অবস্থিত থাকে, যা ATP সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্নঃ স্নায়ু কলা কোথায় থাকে ?

উত্তরঃ স্নায়ু কলা মস্তিস্ক, সুষুম্নাকান্ড এবং স্নায়ুতে পাওয়া যায়।

প্রশ্নঃ কোন্‌ অঙ্গের মাধ্যমে দেহ থেকে CO2 ও জলীয় বাষ্প নির্গত হয় ?

উত্তরঃ ফুসফুস।

প্রশ্নঃ পিত্তরস কোন্‌ অঙ্গ ক্ষরণ করে ?

উত্তরঃ যকৃৎ।

প্রশ্নঃ ত্বক কোথায় থাকে ?

উত্তরঃ ত্বক শরীরের বাইরের দিকে, চামড়ার মতো আবরণে থাকে 

প্রশ্নঃ বুদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে কোন্‌ অঙ্গ ?

উত্তরঃ মস্তিষ্ক।

প্রশ্নঃ RNA তে __________শর্করা থাকে।

উত্তরঃ রাইবোজ।

প্রশ্নঃ দেহে লবণ ও জলের সাম্যতা ______বজায় রাখে।

উত্তরঃ কিডনি।

প্রশ্নঃ কোন্‌ কোশে পর্দাঘেরা কোশ-অঙ্গাণু থাকে না ?

উত্তরঃ ব্যাকটেরিয়া।

প্রশ্নঃ একটি তীব্র অ্যাসিডের উদাহরণ দাও ।

উত্তরঃ নাইট্রিক অ্যাসিড।

প্রশ্নঃ পিউরিনের উপাদান কী ?

উত্তরঃ অ্যাডেনিন ও গুয়ানিন।

প্রশ্নঃ দুধে কোন্‌ শর্করা উপস্থিত থাকে ?

উত্তরঃ ল্যাকটোজ।

প্রশ্নঃ চুল ও নখে কোন্‌ প্রোটিন থাকে ?

উত্তরঃ কেরাটিন।

প্রশ্নঃ কোন্‌ ভিটামিন রান্না করলে নষ্ট হয়ে যায় ?

উত্তরঃ ভিটামিন C

প্রশ্নঃ মাছের তেলে কোন্‌ ভিটামিন থাকে ?

উত্তরঃ ভিটামিন A ও D

প্রশ্নঃ কোন্‌ ভিটামিনের অভাবে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না ?

উত্তরঃ ভিটামিন K

প্রশ্নঃ একটি মিশ্রগ্রন্থির নাম লেখো।

উত্তরঃ অগ্ন্যাশয়।

প্রশ্নঃ কোন্‌ অঙ্গের আলফা ও বিটা কোশ থেকে গ্লুকাগন এবং ইনসুলিন ক্ষরিত হয় ?

উত্তরঃ অগ্ন্যাশয়।

প্রশ্নঃ কোন্‌ প্রকার প্রাণীকলা মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকান্ড এবং স্নায়ুতে থাকে ?

উত্তরঃ স্নায়ুকলা।

প্রশ্নঃ কোশের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে কোন্‌ অঙ্গাণু ?

উত্তরঃ গলগি বডিস।

প্রশ্নঃ কোশের মস্তিষ্ক কোন্‌টি ?

উত্তরঃ নিউক্লিয়াসকে।

প্রশ্নঃ কোন্‌টি মাইনর এলিমেন্ট ?

উত্তরঃ Mo

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ